Dhaka ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

হাজারীবাগে অগ্নিকাণ্ড: ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাব ও সরকারি মনিটরিংয়ের ঘাটতি

  • Update Time : ০৭:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 51

হাজারীবাগের অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনটিতে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাব এবং নোটিশ পাওয়ার পরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সরকারের তত্ত্বাবধান ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অভাবের কারণে এমন ঘটনা প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপগুলো কী হওয়া উচিত, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

রাজধানীর হাজারীবাগ বাজারের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা আবারও দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঘাটতির চিত্র তুলে ধরেছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনটিতে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না এবং এ নিয়ে বারবার নোটিশ দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ভবনটির ট্যানারি গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, “ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি আগুন লাগার আগেই ভবনটি কয়েকবার নোটিশ পেয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

সরু রাস্তা ও পানির সংকট: উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা

ভবনের সরু রাস্তা, পানির সংকট এবং দাহ্য বস্তুগুলো ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে। লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম আরও বলেন, “ভবনের ভেতরে প্রচুর প্লাস্টিক ও লেদার ছিল, যা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে। এছাড়া উৎসুক জনতার ভিড় আমাদের কাজে বাধা দিয়েছে।”

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের প্রয়োজন

বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে নিয়মিত ফায়ার সেফটি প্ল্যান এবং তদারকি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এর আগে অনেক ভবনে ফায়ার সেফটি সংক্রান্ত নিয়মাবলি মানা হয়নি, যা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করে। সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে এই বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে এবং নিয়মিত পরিদর্শনের মাধ্যমে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

জনসচেতনতা ও আইন প্রয়োগের গুরুত্ব

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অবশ্যই তাদের ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যান প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ফায়ার সেফটি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এছাড়া, জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো জরুরি।

উপসংহার

হাজারীবাগের এই অগ্নিকাণ্ড শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়; এটি দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের উদাসীনতার একটি বড় উদাহরণ। সরকার, ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

হাজারীবাগে অগ্নিকাণ্ড: ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাব ও সরকারি মনিটরিংয়ের ঘাটতি

Update Time : ০৭:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

হাজারীবাগের অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনটিতে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাব এবং নোটিশ পাওয়ার পরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সরকারের তত্ত্বাবধান ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অভাবের কারণে এমন ঘটনা প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপগুলো কী হওয়া উচিত, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

রাজধানীর হাজারীবাগ বাজারের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা আবারও দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঘাটতির চিত্র তুলে ধরেছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনটিতে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না এবং এ নিয়ে বারবার নোটিশ দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ভবনটির ট্যানারি গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, “ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি আগুন লাগার আগেই ভবনটি কয়েকবার নোটিশ পেয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

সরু রাস্তা ও পানির সংকট: উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা

ভবনের সরু রাস্তা, পানির সংকট এবং দাহ্য বস্তুগুলো ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে। লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম আরও বলেন, “ভবনের ভেতরে প্রচুর প্লাস্টিক ও লেদার ছিল, যা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে। এছাড়া উৎসুক জনতার ভিড় আমাদের কাজে বাধা দিয়েছে।”

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের প্রয়োজন

বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে নিয়মিত ফায়ার সেফটি প্ল্যান এবং তদারকি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এর আগে অনেক ভবনে ফায়ার সেফটি সংক্রান্ত নিয়মাবলি মানা হয়নি, যা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করে। সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে এই বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে এবং নিয়মিত পরিদর্শনের মাধ্যমে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

জনসচেতনতা ও আইন প্রয়োগের গুরুত্ব

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অবশ্যই তাদের ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যান প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ফায়ার সেফটি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এছাড়া, জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো জরুরি।

উপসংহার

হাজারীবাগের এই অগ্নিকাণ্ড শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়; এটি দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের উদাসীনতার একটি বড় উদাহরণ। সরকার, ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।