নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর প্রভাব: বিএনপির সতর্কতা এবং বিশ্লেষকদের শঙ্কা

- Update Time : ০৬:৫৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
- / 49
সম্প্রতি শতাধিক পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে, যা নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিএনপি। দলটি এই পদক্ষেপকে ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে দ্রুত তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। বিএনপির মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়বে। অন্যদিকে, সরকারের দাবি, এর প্রভাব হবে ‘ন্যূনতম’।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে ভ্যাট ও পরোক্ষ কর বাড়িয়েছে, তা সরাসরি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর চাপ
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, খাদ্য, পোশাক, ওষুধ এবং মোবাইল ইন্টারনেট সেবার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির দুর্ভোগ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, “অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও মুদ্রাস্ফীতির সময় এমন কর বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা অনুচিত।”
বিএনপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, বিকল্প পথে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। যেমন অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ কমিয়ে আনা।
অর্থনৈতিক বাস্তবতা
সরকার বলছে, ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঘাটতি প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
তবে তিনি দাবি করেন, ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ওপর ‘ন্যূনতম’ প্রভাব পড়বে। “আমরা মনে করি এটি দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে,” বলেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতামত
বিশ্লেষকদের মতে, এই কর বৃদ্ধির ফলে মুঠোফোন সেবা, পোশাক, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংক, বিস্কুট ও সিগারেটসহ অনেক পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এবং ‘দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারি করা হয়।
বিএনপির দাবি
বিএনপি জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারকে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে একটি সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
উপসংহার
সরকারের এই ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির পদক্ষেপ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্য নিয়ে নেওয়া হলেও, এর প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনে কতটা পড়বে তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। সরকারের আশ্বাসের বিপরীতে, বিএনপি ও বিশ্লেষকদের উদ্বেগ এই নীতির বাস্তবায়নে নতুন মাত্রা যোগ করছে।