শিগগিরই বাজারে আসছে ৩ হাজার কোটি টাকার ইসলামি বন্ড: বাংলাদেশ ব্যাংক

- Update Time : ১১:০০:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / 51
বাংলাদেশ সরকার শিগগিরই বাজারে পঞ্চম বিনিয়োগ সুকুক বা ইসলামি বন্ড আনার ঘোষণা দিয়েছে। এই সুকুক ইস্যু করা হবে মার্চ মাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্পের আওতায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, “পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্প”-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য এই ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক ইস্যু করা হবে।
বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ
সুকুকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বরাদ্দের হার পুনঃনির্ধারণ করেছে। শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক, ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং বীমা কোম্পানির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭০ শতাংশ। কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্রাঞ্চ ও উইন্ডোজের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ডিপোজিট ইন্সুরেন্সের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ শতাংশ।
সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পে অবদান
সুকুকের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এতে প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি ও অকৃষি পণ্যের পরিবহন সহজীকরণ এবং ব্যয় হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
বিনিয়োগের সুযোগ
সুকুক ক্রয়ে শর্তসাপেক্ষে তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা কোম্পানিগুলো নিলামে অংশ নিতে পারবে। নির্ধারিত শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন না পাওয়া গেলে অবশিষ্ট সুকুক আনুপাতিক হারে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
দেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সুযোগ
বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসকারী ব্যক্তিরা তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এই সুকুকে বিনিয়োগ করতে পারবেন। প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা দেশে কার্যরত যে কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বা টাকায় সুকুকে বিনিয়োগ করতে পারবেন। বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিয়োগ করলে মুনাফা, বিক্রয়লব্ধ অর্থ এবং মেয়াদপূর্তিতে আসল অর্থও বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করা হবে।
সুকুকের পটভূমি
২০১৯-২০ অর্থবছরে শরিয়াভিত্তিক ইসলামি বন্ড বা সুকুক চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। মূলত দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রমে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং খাতের তারল্যকে সরকারের ঘাটতি অর্থায়নে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। যারা সুদযুক্ত টি-বিল, বন্ড ও অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগে আগ্রহী নন, তাদের জন্য সুকুক একটি কার্যকর বিকল্প।
পরিশেষে
এই নতুন সুকুক ইস্যু বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এটি শুধু বিনিয়োগকারীদের জন্য নয়, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যও একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।