সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়: রিজভী

- Update Time : ০৪:৫০:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 60
ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি কোনো নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে হবে, যাতে জনগণের বঞ্চনার দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আজকের রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে। কোনো ধরনের বিক্ষোভ-আন্দোলন দমাতে গুলি করে হত্যার সংস্কৃতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে।”
তিনি শেখ হাসিনার প্রতি অভিযোগ তুলে বলেন, “শেখ হাসিনা ভোটারদের তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেননি। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রদান করতে হবে, যাতে জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পায়।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থেকে তার দলের নেতাকর্মীদের বাংলাদেশে উস্কানি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার এমনভাবে করা উচিত যাতে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে কেউ বাধার সম্মুখীন না হয়। সমালোচনা নিতে না পারলে উপদেষ্টার পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।”
বাজার সিন্ডিকেট ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির অভাবের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “সরকারের সমালোচনা করা বিরুদ্ধাচরণ নয় বরং আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান। সরকারকে জনগণের দাবি মেনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা
বিএনপির পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না করে কোনো নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ইতোমধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সংস্কার ও রাজনৈতিক পরিবেশ
দেশে রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি কোনো নির্বাচনকে আটকে রাখার কারণ হতে পারে না। বরং এই সংস্কার হতে হবে জনগণের স্বার্থে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে।”
বিএনপি সবসময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে কাজ করছে বলে জানান রিজভী। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধ করে একটি কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে।
শেষ কথা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতারা আরও জোরালোভাবে এই দাবি উত্থাপন করছেন। আগামী দিনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল রয়েছে।