মেট্রোরেলের আয় ২৪৪ কোটি টাকা, বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা ও পরিসেবা

- Update Time : ১১:০১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 51
ঢাকা মেট্রোরেলে যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় হয়েছে ২৪৩ কোটি ৯১ লাখ ৭ হাজার ৬২৫ টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ আয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৩ গুণ, যা মেট্রোরেলের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার বৃদ্ধির প্রমাণ।
মেট্রোরেলে যাত্রীসংখ্যায় নতুন রেকর্ড
মেট্রোরেল চালুর পর গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সর্বোচ্চ দুই লাখ ৮২ হাজার যাত্রী পরিবহন করেছে। রাজধানীর দিয়াবাড়িতে ডিপোতে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ‘রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড’ (আরআরআর)-এর সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো লাইন চালুর পরিকল্পনা
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ চালু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। আগামী জুনে মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশ উদ্বোধনের মাধ্যমে ২১.২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি-৬ লাইনের পুরোটা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মেট্রোরেলে দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্য
মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, প্রথম বছর পরীক্ষামূলকভাবে দিনে মাত্র ১০ বার ট্রেন চলাচল করত। বর্তমানে ট্রিপের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০-তে। ডিএমটিসিএলের লক্ষ্য দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করা, যা বাস্তবায়িত হলে মেট্রোরেলে ভর্তুকির প্রয়োজন পড়বে না। এছাড়া, দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত এমআরটি-৬ লাইন সম্প্রসারিত হলে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে।
শুক্রবার সকালেও চলবে মেট্রোরেল
আগামী মে মাস থেকে শুক্রবার সকালেও মেট্রোরেল চালানোর পরিকল্পনা করছে ডিএমটিসিএল। বর্তমানে শুক্রবার বেলা ২টা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও, যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গ্রাফিতি ও পোস্টার নিষিদ্ধকরণ
মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ হলেও, নান্দনিকতার স্বার্থে গ্রাফিতি অনুমোদিত। তবে, অনেকেই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পোস্টার লাগাচ্ছেন, যা রেলপথের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এটি বন্ধ করতে সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান আবদুর রউফ।
কর্মী সংকটে ডিএমটিসিএল
গত ৫ আগস্ট কর্মীদের পেশাগত মর্যাদা, গ্রেড ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি হয়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০০ জন কর্মী চাকরি ছেড়ে গেছেন। একজন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার পর যদি তিনি চাকরি ছেড়ে দেন, তবে নতুন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি বর্তমানে ডিএমটিসিএলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমটিসিএলের পরিচালক নাসির উদ্দিন আহমেদ, পরিচালক মো. আফতাবুজ্জামান, আরআরআর সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. তাওহীদুল ইসলাম, সহসভাপতি পার্থ সারথি দাস এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য মুনিমা সুলতানা প্রমুখ।
মেট্রোরেলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা, উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঢাকাবাসীর জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।