চার দফা দাবিতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের আন্দোলন: অনশনসহ নতুন কর্মসূচির ঘোষণা

- Update Time : ০৭:৫১:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 97
ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি: মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা তাদের চার দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। তবে এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে, দুপুরের পর থেকে তারা একযোগে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য তিনদিন সময় নিয়েছে, তবে অন্য তিনটি দাবির বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি। তাই তারা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আমরণ অনশনে যাবেন।
পুলিশের হামলার অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন যে, রোববার যখন ম্যাটস শিক্ষার্থীদের একটি দল স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে অংশ নেয়, তখন অন্য শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের উদ্দেশ্যে শাহবাগ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এসময় পুলিশ তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়, যাতে ৬০ জন গুরুতরসহ প্রায় ১২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আমরা এই বর্বর হামলার বিচার চাই এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
পূর্বের আন্দোলন ও বর্তমান কর্মসূচি
এর আগে, রোববার বেলা ১১টার দিকে ম্যাটস শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন এবং এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড় থেকে লং মার্চ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শিক্ষার্থীরা লং মার্চ অব্যাহত রাখেন।
চার দফা দাবিসমূহ: ১. উচ্চশিক্ষার সুযোগ: ১৯৭৩-১৯৭৮ সালের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। 2. নিয়োগ ও নতুন পদ সৃষ্টি: উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে দ্রুত নিয়োগ প্রদানসহ কমিউনিটি ক্লিনিক, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে। 3. ইন্টার্নশিপ ও কারিকুলাম সংশোধন: চার বছরের একাডেমিক কোর্স বহাল রেখে পূর্বের মতো এক বছরের ভাতাসহ ইন্টার্নশিপ চালু করতে হবে এবং অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করতে হবে। 4. নতুন শিক্ষা বোর্ড গঠন: প্রস্তাবিত অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল শিক্ষা বোর্ড বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে নতুন বোর্ড গঠন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে কিনা, তা নিয়ে এখন সবার নজর সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।