Dhaka ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

জামায়াত আমিরের চ্যালেঞ্জ: এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তি চাই, নাহয় আমিও কারাগারে যেতে প্রস্তুত

  • Update Time : ০৬:১৯:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 23

লক্ষ্মীপুরে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কারাবন্দী জামায়াত নেতা এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিন, নাহয় আমিও কারাগারে যেতে প্রস্তুত।”

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক গণজমায়েতে তিনি এ দাবি তোলেন। জামায়াত আমির বলেন, “১৩ বছর ধরে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আজহারুল ইসলাম জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন। দয়া করে তাকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। তাকে ভেতরে রেখে আমি আর বাইরে থাকতে চাই না।”

তিনি আরও বলেন, “২৫ ফেব্রুয়ারি আমি স্বেচ্ছায় নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেব। আমাকে গ্রেপ্তার করুন, কারাগারে পাঠান। যেদিন আজহার ভাই মুক্তি পাবেন, পরদিন আমাকে মুক্তি দিন। নাহয় জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করে দেশের তিন কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে জেলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান।”

২৪এর পরেও কি আমরা মুক্ত?
শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন, “মানুষ আশা করেছিল ২৪এর পরে সকল দুঃশাসন, দুর্নীতি ও অন্যায় থেকে তারা মুক্তি পাবে। আমরা কি মুক্ত হতে পেরেছি?” তিনি বলেন, “আমাদের সন্তানরা বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বুক পেতে দিয়েছিল। তারা বুলেটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। প্রতিবাদ ছিল অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে। পৃথিবীতে যুবকরা কখনো অন্যায় মেনে নেয় না। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। আর এই সংগ্রামে হয় তারা শহীদ হয়, না হয় গাজী হয়ে ফিরে আসে।”

তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলনে শত শত যুবক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ জীবন দিয়েছে। ৩৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। তার পরেও এখনো অন্যায়, অবিচার ও জুলুম রয়ে গেছে। তারা কারা যারা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করছে? আমরা তাদের দল দেখতে চাই না, আমরা তাদের গোত্র দেখতে চাই না। তাদের বলব, আপনারা ভালো হয়ে যান। শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না।”

জমায়েতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
জেলা জামায়াতের আমীর এসইউএম রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আজীম প্রমুখ।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন লক্ষ্মীপুর জেলা নায়েবে আমীর নজির আহম্মদ, এ আর হাফিজ উল্লাহ, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মহসিন কবীর মুরাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী, শহর জামায়াতের আমীর আবুল ফারাহ নিশান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

শফিকুর রহমানের চ্যালেঞ্জ
শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। তার এই চ্যালেঞ্জ সরকারের জন্য একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জামায়াত নেতা এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি এখন শুধু দলীয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নেই, এটি জাতীয় পর্যায়েও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াতের এই দাবি কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা এখন সময়ই বলবে। তবে শফিকুর রহমানের এই সাহসী পদক্ষেপ জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, ট্রেন্ড বিডিনিউজ।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

জামায়াত আমিরের চ্যালেঞ্জ: এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তি চাই, নাহয় আমিও কারাগারে যেতে প্রস্তুত

Update Time : ০৬:১৯:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কারাবন্দী জামায়াত নেতা এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিন, নাহয় আমিও কারাগারে যেতে প্রস্তুত।”

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক গণজমায়েতে তিনি এ দাবি তোলেন। জামায়াত আমির বলেন, “১৩ বছর ধরে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আজহারুল ইসলাম জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন। দয়া করে তাকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। তাকে ভেতরে রেখে আমি আর বাইরে থাকতে চাই না।”

তিনি আরও বলেন, “২৫ ফেব্রুয়ারি আমি স্বেচ্ছায় নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেব। আমাকে গ্রেপ্তার করুন, কারাগারে পাঠান। যেদিন আজহার ভাই মুক্তি পাবেন, পরদিন আমাকে মুক্তি দিন। নাহয় জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করে দেশের তিন কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে জেলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান।”

২৪এর পরেও কি আমরা মুক্ত?
শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন, “মানুষ আশা করেছিল ২৪এর পরে সকল দুঃশাসন, দুর্নীতি ও অন্যায় থেকে তারা মুক্তি পাবে। আমরা কি মুক্ত হতে পেরেছি?” তিনি বলেন, “আমাদের সন্তানরা বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বুক পেতে দিয়েছিল। তারা বুলেটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। প্রতিবাদ ছিল অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে। পৃথিবীতে যুবকরা কখনো অন্যায় মেনে নেয় না। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। আর এই সংগ্রামে হয় তারা শহীদ হয়, না হয় গাজী হয়ে ফিরে আসে।”

তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলনে শত শত যুবক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ জীবন দিয়েছে। ৩৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। তার পরেও এখনো অন্যায়, অবিচার ও জুলুম রয়ে গেছে। তারা কারা যারা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করছে? আমরা তাদের দল দেখতে চাই না, আমরা তাদের গোত্র দেখতে চাই না। তাদের বলব, আপনারা ভালো হয়ে যান। শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না।”

জমায়েতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
জেলা জামায়াতের আমীর এসইউএম রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আজীম প্রমুখ।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন লক্ষ্মীপুর জেলা নায়েবে আমীর নজির আহম্মদ, এ আর হাফিজ উল্লাহ, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মহসিন কবীর মুরাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী, শহর জামায়াতের আমীর আবুল ফারাহ নিশান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

শফিকুর রহমানের চ্যালেঞ্জ
শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। তার এই চ্যালেঞ্জ সরকারের জন্য একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জামায়াত নেতা এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি এখন শুধু দলীয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নেই, এটি জাতীয় পর্যায়েও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াতের এই দাবি কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা এখন সময়ই বলবে। তবে শফিকুর রহমানের এই সাহসী পদক্ষেপ জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, ট্রেন্ড বিডিনিউজ।