সোহেল তাজ ও পিলখানা ট্র্যাজেডি: ইলিয়াস হোসাইনের বিস্ফোরক অভিযোগ

- Update Time : ১০:০০:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 67
প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন সম্প্রতি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তার এই পোস্টে তিনি ২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডি বা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ধরেছেন। এই অভিযোগ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং নতুন করে পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
ইলিয়াস হোসাইন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দাবি করেছেন, সেনা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সোহেল তাজের বিরুদ্ধে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সোহেল তাজ পিলখানা ট্র্যাজেডির সময় লন্ডনে অবস্থান করার কথা বললেও, বাস্তবে তিনি গোপনে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং ঘটনার পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন ইলিয়াস।
ইলিয়াস হোসাইন তার পোস্টে লিখেছেন, “সোহেল তাজ দাবি করেছিলেন যে, তিনি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় লন্ডনে ছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি ঢাকা থেকে সরাসরি লন্ডন যাননি। তিনি সিলেট হয়ে হেলিকপ্টারে ঢাকায় ফিরে এসেছিলেন এবং গোপনে অবস্থান করেছিলেন। যদি তার পাসপোর্ট পরীক্ষা করা হয়, তাহলে ঢাকা থেকে কোনো আন্তর্জাতিক গন্তব্যে তার পৌঁছানোর তথ্য পাওয়া যাবে না।”
ইলিয়াস আরও দাবি করেন, এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য সোহেল তাজের পাসপোর্ট জব্দ করা প্রয়োজন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানান এবং কোনো গাফিলতি হলে এর দায় সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে বলেও সতর্ক করেন।
এছাড়া, ইলিয়াস হোসাইন সোহেল তাজের বাবা এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র”-এর সঙ্গে সুসম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন। তার মতে, এই সম্পর্কও পিলখানা ট্র্যাজেডির পেছনে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে।
ইলিয়াস হোসাইনের এই অভিযোগের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আবার অনেকে দ্রুত তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে সোহেল তাজ বা সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের কাছ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত পিলখানা ট্র্যাজেডিতে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর একদল বিদ্রোহী সদস্য তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। এই ঘটনায় ৭৪ জনের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন সেনা কর্মকর্তা। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
ইলিয়াস হোসাইনের এই অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি উঠতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো প্রমাণ বা দলিল উপস্থাপন করা হয়নি। তাই এই অভিযোগ কতটা সত্য বা এর পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলমান আলোচনা এবং জনমতের চাপে হয়তো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত তদন্তে এগিয়ে আসতে পারে। তবে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং এর পেছনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বুঝতে আরও সময় ও তথ্যের প্রয়োজন।
এই মুহূর্তে ইলিয়াস হোসাইনের এই বিস্ফোরক মন্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল তাজ বা সংশ্লিষ্ট পক্ষ কী প্রতিক্রিয়া জানায় এবং এই ঘটনার সত্যতা উন্মোচনে কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়।