Dhaka ০৯:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
শিরোনাম :

ক্যানসারের ১০টি সতর্কতা লক্ষণ: যা অবশ্যই জানা উচিত

  • Update Time : ১০:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 94

ক্যানসার একটি ভয়াবহ রোগ, যা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় সম্ভব। তবে অনেক সময় আমরা ছোটখাটো লক্ষণগুলোকে অবহেলা করি, যা পরবর্তীতে বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্যানসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা জানা থাকলে প্রাথমিক অবস্থায়ই সতর্ক হওয়া যায়। চলুন জেনে নিই ক্যানসারের ১০টি সতর্কতা লক্ষণ, যা কখনই উপেক্ষা করা উচিত নয়।

১. অকারণে ওজন কমা

যদি কোনো কারণ ছাড়াই আপনার ওজন দ্রুত কমতে শুরু করে, বিশেষ করে ৫ কেজি বা তার বেশি, তবে এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস বা খাদ্যনালীর ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

২. দীর্ঘস্থায়ী জ্বর

জ্বর সাধারণত সংক্রমণের কারণে হয়, কিন্তু যদি জ্বর দীর্ঘদিন ধরে থাকে এবং এর কোনো স্পষ্ট কারণ না পাওয়া যায়, তবে এটি ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে লিউকেমিয়া বা লিম্ফোমার ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেয়।

৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি

যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত ক্লান্ত বোধ করেন এবং বিশ্রাম নেওয়ার পরও তা না কমে, তবে এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে কোলন বা পাকস্থলীর ক্যানসারে রক্তপাতের কারণে এমন ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

৪. ত্বকের পরিবর্তন

ত্বকের রং পরিবর্তন, হঠাৎ কালো দাগ, অতিরিক্ত চুলকানি বা জন্ডিসের মতো লক্ষণগুলো ত্বকের ক্যানসার বা অন্যান্য ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। ত্বকের কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে অবহেলা করা উচিত নয়।

৫. মল বা প্রস্রাবের অভ্যাসে পরিবর্তন

কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলের আকারে পরিবর্তন মলাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন প্রোস্টেট বা মূত্রাশয়ের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে।

৬. ক্ষত না শুকানো

যদি শরীরের কোনো ক্ষত চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে না শুকায়, তবে এটি ত্বকের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। মুখের ভেতরে এমন ক্ষত থাকলে তা মুখের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে।

৭. অস্বাভাবিক রক্তপাত

কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া মলাশয় বা মলদ্বারের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের বাইরে যোনিপথে রক্তপাত জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

৮. শরীরে চাকা বা শক্ত পিণ্ড

স্তন, অণ্ডকোষ বা শরীরের অন্য কোনো অংশে চাকা বা শক্ত পিণ্ড অনুভব করলে তা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের চাকা বা পিণ্ড দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৯. গিলতে কষ্ট হওয়া

যদি খাবার গিলতে সমস্যা হয় বা গলায় কিছু আটকে আছে এমন অনুভূতি হয়, তবে এটি গলা, খাদ্যনালী বা পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

১০. দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন

যদি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকে বা কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হয়, তবে এটি ফুসফুস বা স্বরযন্ত্রের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

সতর্কতা ও পরামর্শ

উপরের লক্ষণগুলো ক্যানসারের ইঙ্গিত দিলেও এগুলো অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। তাই এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে এর চিকিৎসা সহজ হয় এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে ক্যানসারের মতো ভয়াবহ রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। তাই নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হোন এবং কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণকে অবহেলা করবেন না।

সূত্র: আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, বিবিসি হেলথ।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

ক্যানসারের ১০টি সতর্কতা লক্ষণ: যা অবশ্যই জানা উচিত

Update Time : ১০:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্যানসার একটি ভয়াবহ রোগ, যা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ বা নিরাময় সম্ভব। তবে অনেক সময় আমরা ছোটখাটো লক্ষণগুলোকে অবহেলা করি, যা পরবর্তীতে বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্যানসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা জানা থাকলে প্রাথমিক অবস্থায়ই সতর্ক হওয়া যায়। চলুন জেনে নিই ক্যানসারের ১০টি সতর্কতা লক্ষণ, যা কখনই উপেক্ষা করা উচিত নয়।

১. অকারণে ওজন কমা

যদি কোনো কারণ ছাড়াই আপনার ওজন দ্রুত কমতে শুরু করে, বিশেষ করে ৫ কেজি বা তার বেশি, তবে এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস বা খাদ্যনালীর ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

২. দীর্ঘস্থায়ী জ্বর

জ্বর সাধারণত সংক্রমণের কারণে হয়, কিন্তু যদি জ্বর দীর্ঘদিন ধরে থাকে এবং এর কোনো স্পষ্ট কারণ না পাওয়া যায়, তবে এটি ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে লিউকেমিয়া বা লিম্ফোমার ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেয়।

৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি

যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত ক্লান্ত বোধ করেন এবং বিশ্রাম নেওয়ার পরও তা না কমে, তবে এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে কোলন বা পাকস্থলীর ক্যানসারে রক্তপাতের কারণে এমন ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

৪. ত্বকের পরিবর্তন

ত্বকের রং পরিবর্তন, হঠাৎ কালো দাগ, অতিরিক্ত চুলকানি বা জন্ডিসের মতো লক্ষণগুলো ত্বকের ক্যানসার বা অন্যান্য ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। ত্বকের কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে অবহেলা করা উচিত নয়।

৫. মল বা প্রস্রাবের অভ্যাসে পরিবর্তন

কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলের আকারে পরিবর্তন মলাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন প্রোস্টেট বা মূত্রাশয়ের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে।

৬. ক্ষত না শুকানো

যদি শরীরের কোনো ক্ষত চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে না শুকায়, তবে এটি ত্বকের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। মুখের ভেতরে এমন ক্ষত থাকলে তা মুখের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে।

৭. অস্বাভাবিক রক্তপাত

কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া মলাশয় বা মলদ্বারের ক্যানসারের ইঙ্গিত দিতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের বাইরে যোনিপথে রক্তপাত জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

৮. শরীরে চাকা বা শক্ত পিণ্ড

স্তন, অণ্ডকোষ বা শরীরের অন্য কোনো অংশে চাকা বা শক্ত পিণ্ড অনুভব করলে তা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের চাকা বা পিণ্ড দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৯. গিলতে কষ্ট হওয়া

যদি খাবার গিলতে সমস্যা হয় বা গলায় কিছু আটকে আছে এমন অনুভূতি হয়, তবে এটি গলা, খাদ্যনালী বা পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

১০. দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন

যদি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকে বা কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হয়, তবে এটি ফুসফুস বা স্বরযন্ত্রের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

সতর্কতা ও পরামর্শ

উপরের লক্ষণগুলো ক্যানসারের ইঙ্গিত দিলেও এগুলো অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। তাই এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে এর চিকিৎসা সহজ হয় এবং সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে ক্যানসারের মতো ভয়াবহ রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। তাই নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হোন এবং কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণকে অবহেলা করবেন না।

সূত্র: আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি, বিবিসি হেলথ।