তরুণ নেতৃত্বে নতুন দল: জাতীয় নাগরিক পার্টির অভিষেক

- Update Time : ০৯:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 33
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক সংযোজন হলো ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। এই দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আখতার হোসেন। নাহিদ ইসলামকে দলের আহ্বায়ক এবং আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও নেতৃত্ব ঘোষণা
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এই রাজনৈতিক দলের যাত্রা শুরু হয়। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত শহীদ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করেন। এরপর আখতার হোসেন দলের আংশিক অর্গানোগ্রাম উপস্থাপন করেন এবং কমিটির ১৫১টি পদের কথা জানান। তিনি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব, প্রধান সমন্বয়কারী এবং মুখ্য সংগঠকসহ অন্যান্য পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করেন।
দলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
জাতীয় নাগরিক পার্টির মূল লক্ষ্য হলো গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। দলটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে একটি সুশাসিত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। দলের নেতৃত্বে রয়েছেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা, যারা দেশের ভবিষ্যত গঠনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্ত
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক অংশ শুরু হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন
অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশ নেন। নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস
সকাল থেকেই রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা জড়ো হন। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে তারা পতাকা হাতে নিয়ে এবং মাথায় পতাকা বেঁধে মিছিল ও স্লোগানের মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাদের এই উদ্দীপনা নতুন দলের প্রতি সাধারণ মানুষের আশা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন।
ভবিষ্যতের পথচলা
জাতীয় নাগরিক পার্টির যাত্রা শুরু হয়েছে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন ও আশা নিয়ে। দলটি তাদের কর্মসূচি ও নীতিমালা নিয়ে শীঘ্রই বিস্তারিত ঘোষণা করবে বলে জানানো হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এই নতুন সংযোজন কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে, তরুণ নেতৃত্ব ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতি তাদের অঙ্গীকার বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির এই যাত্রা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। আগামী দিনে এই দলটি দেশের রাজনীতিতে কী ধরনের ভূমিকা রাখে, তা সকলের কাছেই এখন প্রত্যাশার বিষয়।