পোস্টার-ব্যানারে হারিয়ে যাচ্ছে নগরের সৌন্দর্য ও শ্রদ্ধার স্থান!

- Update Time : ০৪:৩৫:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
- / 47
শহরের চারদিকে চোখ রাখলেই একটি চিত্র আজ বারবার ফিরে আসে—দেয়ালজুড়ে রাজনৈতিক ব্যানার, সাংস্কৃতিক পোস্টার, বিজ্ঞাপন কিংবা শুভেচ্ছাবার্তার বন্যা। সবই যেন এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা—কে কত বেশি জায়গা দখল করতে পারে! এক সময় যেসব জায়গা ছিল পরিচ্ছন্ন, নান্দনিক এবং ইতিহাসভিত্তিক, আজ সেগুলো হয়ে উঠেছে দৃষ্টিকটূ ও অগোছালো।
সম্প্রতি দেখা গিয়েছে ‘শহীদ সাগর চত্বর’ ও ‘শহীদ সাগর সড়ক’—যেখানে দেয়ালে, গাছে, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে এমনকি শহীদদের নাম ফলকেও সাঁটানো হয়েছে ব্যানার ও পোস্টার। রাজনৈতিক ব্যানারে ঢাকা পড়ে গেছে শহীদের স্মৃতি।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা সারা দেশে দেয়ালজুড়ে দেশপ্রেম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে গ্রাফিতি আঁকে, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়। কিন্তু চট্টগ্রামের মতো শহরে এসব গ্রাফিতি এখন নেতাদের পোস্টারে ঢেকে যাচ্ছে। সোর্স

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪

জুলাই গ্রাফিতি সংগৃহীত ২০২৪
দেয়াল আমাদের সংস্কৃতি নয়—দেয়াল আমাদের পরিচয়!
এক সময় দেয়াল লিখন ছিল প্রতিবাদের শক্তিশালী মাধ্যম। কিন্তু এখন তা রূপ নিয়েছে বানিজ্যিক আগ্রাসনে। আজকে চাইলেই যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিজের পণ্য, অনুষ্ঠান, বা ইচ্ছেমতো বার্তা সাঁটিয়ে দিচ্ছে—যেখানে মন চায়।
এর ফলে:
শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে
গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
ঐতিহাসিক স্থান ও স্মৃতিস্তম্ভের অবমাননা হচ্ছে
এবং সাধারণ মানুষ মানসিকভাবে বিরক্ত হচ্ছে
শুধু দৃষ্টিকটূ নয়—পরিবেশের ওপর ভয়াবহ প্রভাব!
পুরনো পোস্টার খুলে পড়ে রাস্তা ও ড্রেন আটকে দিচ্ছে
ব্যানার ঝুলাতে গিয়ে গাছে পেরেক মারা হচ্ছে
পোস্টার কেটে ফেলার পর পলিথিন-আঠা মাটিতে পড়ে দূষণ সৃষ্টি করছে
শিশু-কিশোররা দেয়ালে পাঠ্যবিষয়ক লেখার পরিবর্তে দেখছে অপ্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন
আমরা কী করতে পারি?
স্কুল-কলেজে পরিবেশ সচেতনতা কর্মসূচি চালু হোক
প্রশাসন যেন দেয়াল-দখলের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করে
ব্যানার-পোস্টারের পরিবর্তে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ও LED স্ক্রিন ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হোক
আমরা সবাই চাই আমাদের শহর হোক পরিচ্ছন্ন, সম্মানজনক এবং সৌন্দর্যময়। শহীদের নামে গড়া কোনো স্থান যদি ব্যানারে ঢেকে যায়, তবে সেটা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নয়—বরং বড় এক অবমাননা।
আসুন, আমরা সবাই বলি—
পোস্টার নয়, সচেতনতা চাই!
পরিবেশ বাঁচান, সৌন্দর্য রক্ষা করুন!