Dhaka ০৭:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
শিরোনাম :

যুদ্ধের প্রস্তুতি? ভারতজুড়ে চলছে বিশেষ নিরাপত্তা মহড়া!

  • Update Time : ০৮:১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 40

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বুধবার সারাদেশে “যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া” পরিচালনা করছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই মহড়ার মাধ্যমে যুদ্ধকালীন বা আকস্মিক হামলার সময় সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা ও করণীয় বিষয়ে প্রস্তুতি যাচাই করা হচ্ছে।

মহড়ার লক্ষ্য ও প্রস্তুতি

  • বেসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: দেশের ২৪৪টি জেলায় শহর ও গ্রামীণ এলাকায় বিমান হামলা, সাইরেন সংকেত, কন্ট্রোল রুমের কার্যকারিতা এবং সাধারণ জনগণের নিরাপদ সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হচ্ছে।
  • ব্ল্যাক আউট ড্রিল: বিমান হামলার সময় আলো নিভিয়ে শহরকে অদৃশ্য করার (“কেমোফ্লেজ”) প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
  • স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশিক্ষণ: এনসিসি ক্যাডেট, হোমগার্ড, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকদের যুদ্ধকালীন দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব গোভিন্দ মোহন এই মহড়ার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, “যুদ্ধে শুধু সেনাবাহিনী নয়, সাধারণ মানুষকেও ভূমিকা রাখতে হবে। এই মহড়া পাকিস্তানকে একটি সতর্কবার্তাও দিচ্ছে।”

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও হুঁশিয়ারি

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, “ভারত কাশ্মীরে যেকোনো সময় সামরিক হামলা চালাতে পারে।” অন্যদিকে, পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো ভারতের সিন্ধু নদী চুক্তি (IWT) স্থগিত করার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও পানির রাজনীতিকরণ।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ভারত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও কানাডায় সন্ত্রাসবাদে জড়িত।”

জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ ও শান্তির আহ্বান

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য কূটনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, “গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ভারত সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে।” তবে ভারত এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সংঘাতের ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়ও ভারত ব্ল্যাক আউট ড্রিল ও সাইরেন সংকেত ব্যবহার করেছিল। বর্তমান উত্তেজনা কাশ্মীর ইস্যু, সন্ত্রাসবাদ ও জলবণ্টন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বিরোধের কারণে তীব্র হয়েছে।

সামনের দিকে

এই মহড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি বাড়ালেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযত হতে বলছে। উত্তেজনা আর না বাড়লে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা থাকলেও পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

যুদ্ধের প্রস্তুতি? ভারতজুড়ে চলছে বিশেষ নিরাপত্তা মহড়া!

Update Time : ০৮:১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বুধবার সারাদেশে “যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া” পরিচালনা করছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই মহড়ার মাধ্যমে যুদ্ধকালীন বা আকস্মিক হামলার সময় সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা ও করণীয় বিষয়ে প্রস্তুতি যাচাই করা হচ্ছে।

মহড়ার লক্ষ্য ও প্রস্তুতি

  • বেসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: দেশের ২৪৪টি জেলায় শহর ও গ্রামীণ এলাকায় বিমান হামলা, সাইরেন সংকেত, কন্ট্রোল রুমের কার্যকারিতা এবং সাধারণ জনগণের নিরাপদ সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হচ্ছে।
  • ব্ল্যাক আউট ড্রিল: বিমান হামলার সময় আলো নিভিয়ে শহরকে অদৃশ্য করার (“কেমোফ্লেজ”) প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
  • স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশিক্ষণ: এনসিসি ক্যাডেট, হোমগার্ড, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকদের যুদ্ধকালীন দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব গোভিন্দ মোহন এই মহড়ার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, “যুদ্ধে শুধু সেনাবাহিনী নয়, সাধারণ মানুষকেও ভূমিকা রাখতে হবে। এই মহড়া পাকিস্তানকে একটি সতর্কবার্তাও দিচ্ছে।”

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও হুঁশিয়ারি

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, “ভারত কাশ্মীরে যেকোনো সময় সামরিক হামলা চালাতে পারে।” অন্যদিকে, পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো ভারতের সিন্ধু নদী চুক্তি (IWT) স্থগিত করার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ ও পানির রাজনীতিকরণ।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ভারত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও কানাডায় সন্ত্রাসবাদে জড়িত।”

জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ ও শান্তির আহ্বান

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য কূটনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, “গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ভারত সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে।” তবে ভারত এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সংঘাতের ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়ও ভারত ব্ল্যাক আউট ড্রিল ও সাইরেন সংকেত ব্যবহার করেছিল। বর্তমান উত্তেজনা কাশ্মীর ইস্যু, সন্ত্রাসবাদ ও জলবণ্টন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বিরোধের কারণে তীব্র হয়েছে।

সামনের দিকে

এই মহড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি বাড়ালেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযত হতে বলছে। উত্তেজনা আর না বাড়লে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা থাকলেও পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।