Dhaka ০৯:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
শিরোনাম :

ভারতের অপারেশন সিন্দুর: ইসরায়েল-তুরস্কের সমর্থনে উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গন

  • Update Time : ১১:৩১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 40

নয়াদিল্লি, ৭ মে ২০২৫ – কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই অভিযানের কোডনাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। ভারতের এই স্ট্রাইকের পর আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যেখানে ইসরায়েল ভারতের পক্ষে এবং তুরস্ক পাকিস্তানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।

হামলার পটভূমি

গত দুই সপ্তাহ আগে পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করে এবং এর জবাবে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ৯টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও ভারতীয় গোয়েন্দা ও সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এই হামলা সুনির্দিষ্টভাবে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোকেই লক্ষ্য করে করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সমর্থন, তুরস্কের বিরোধিতা

ভারতের এই সামরিক পদক্ষেপের পর ইসরায়েল প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার এক বিবৃতিতে বলেন, “সন্ত্রাসীদের জানা উচিত, তাদের জঘন্য অপরাধের জন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই। ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে পুরোপুরি সমর্থন করে।”

অন্যদিকে, তুরস্ক পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে ভারতের এই হামলাকে ‘অপ্রস্তুত আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার-এর সাথে যোগাযোগ করে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তুরস্ক এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেছে যে তারা পাকিস্তানের পাশে থাকবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

  • জাতিসংঘ – মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি উভয় দেশকে সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং দ্রুত শান্তি কামনা করেছেন।
  • অন্যান্য দেশ – ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জিসিসি দেশগুলি সংঘাত নিরসনে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে।

ভারতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক

ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই হামলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হামলার আগাম তথ্য পেয়েও যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হামলা ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রয়োজনীয় প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

উভয় দেশই সীমান্তে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে, তবে এখনও সরাসরি যুদ্ধের কোনো ইঙ্গিত নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কূটনৈতিক আলোচনা ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাই এই সংঘাত নিরসনের মূল উপায় হতে পারে।

(সূত্র: নিউজ১৮, আল জাজিরা, রয়টার্স)

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

ভারতের অপারেশন সিন্দুর: ইসরায়েল-তুরস্কের সমর্থনে উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গন

Update Time : ১১:৩১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

নয়াদিল্লি, ৭ মে ২০২৫ – কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই অভিযানের কোডনাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। ভারতের এই স্ট্রাইকের পর আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যেখানে ইসরায়েল ভারতের পক্ষে এবং তুরস্ক পাকিস্তানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।

হামলার পটভূমি

গত দুই সপ্তাহ আগে পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করে এবং এর জবাবে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ৯টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও ভারতীয় গোয়েন্দা ও সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এই হামলা সুনির্দিষ্টভাবে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোকেই লক্ষ্য করে করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সমর্থন, তুরস্কের বিরোধিতা

ভারতের এই সামরিক পদক্ষেপের পর ইসরায়েল প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার এক বিবৃতিতে বলেন, “সন্ত্রাসীদের জানা উচিত, তাদের জঘন্য অপরাধের জন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই। ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে পুরোপুরি সমর্থন করে।”

অন্যদিকে, তুরস্ক পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে ভারতের এই হামলাকে ‘অপ্রস্তুত আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার-এর সাথে যোগাযোগ করে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তুরস্ক এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেছে যে তারা পাকিস্তানের পাশে থাকবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

  • জাতিসংঘ – মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি উভয় দেশকে সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং দ্রুত শান্তি কামনা করেছেন।
  • অন্যান্য দেশ – ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জিসিসি দেশগুলি সংঘাত নিরসনে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে।

ভারতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক

ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই হামলা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হামলার আগাম তথ্য পেয়েও যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হামলা ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট ও প্রয়োজনীয় প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

উভয় দেশই সীমান্তে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে, তবে এখনও সরাসরি যুদ্ধের কোনো ইঙ্গিত নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কূটনৈতিক আলোচনা ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাই এই সংঘাত নিরসনের মূল উপায় হতে পারে।

(সূত্র: নিউজ১৮, আল জাজিরা, রয়টার্স)