সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার: চিকিৎসা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

- Update Time : ০৯:১০:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
- / 13
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। তার দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ক্যানসারটি ইতিমধ্যে তার হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এই খবর প্রকাশের পরই বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কীভাবে শনাক্ত হলো?
৮২ বছর বয়সী বাইডেন গত সপ্তাহে প্রস্রাবজনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার (১৬ মে) তার প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি অ্যাগ্রেসিভ (আক্রমণাত্মক) ধরনের ক্যানসার, যার গ্লিসন স্কোর ১০-এর মধ্যে ৯। গ্লিসন স্কোর প্রোস্টেট ক্যানসারের তীব্রতা নির্দেশ করে, এবং ৯ স্কোর একটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ক্যানসারকে নির্দেশ করে, যা দ্রুত ছড়াতে পারে।
চিকিৎসার সম্ভাবনা
বাইডেনের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এই ক্যানসারটি হরমোন-সেনসিটিভ, অর্থাৎ হরমোন থেরাপির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। বাইডেন ও তার পরিবার বর্তমানে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।
রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
এই খবরের পর ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নেতারা বাইডেনের প্রতি সমর্থন ও সহানুভূতি জানিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে বলেন, “আমি ও মেলানিয়া বাইডেনের অসুস্থতার খবর শুনে খুবই দুঃখিত। আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।”
ডেমোক্র্যাট নেতা রো খান্না এক্স (টুইটার)-এ লিখেছেন, “জো ও জিল বাইডেন সবসময় সংগ্রাম করে জয়ী হয়েছেন। এবারও তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন।”
বাইডেনের স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের অংশগ্রহণ নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা ছিল। বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রোস্টেট ক্যানসার: পুরুষদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, ত্বকের ক্যানসারের পর যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সিডিসি’র পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে প্রায় ১৩ জন জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি বাড়ে।
বাইডেনের ক্যানসার গবেষণায় অবদান
বাইডেন দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার গবেষণার পক্ষে সক্রিয়। ২০২২ সালে তিনি ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন “ক্যানসার মুনশট” প্রকল্প পুনরায় চালু করেন, যার লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে ক্যানসারজনিত মৃত্যু ৪০ লাখ কমিয়ে আনা। তার বড় ছেলে বাউ বাইডেন ২০১৫ সালে ব্রেইন ক্যানসারে মারা যান, যা বাইডেন পরিবারকে ক্যানসার সচেতনতায় আরও সক্রিয় করে তোলে।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
চিকিৎসা শুরু হলে বাইডেনের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণই এখন মূল আলোচনার বিষয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হরমোন থেরাপি ও অন্যান্য আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি তার জন্য কার্যকর হতে পারে।
এই সংকটময় সময়ে বিশ্ব নেতা হিসেবে বাইডেনের ভূমিকা ও তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপডেটস সবাইকে অব্যাহতভাবে ভাবিয়ে তুলবে।