যুক্তরাজ্যের নতুন আইন: অ্যাপল ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য কি ঝুঁকির মুখে?

- Update Time : ১০:৩২:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 105
ট্রেন্ডবিডিনিউজ ডেস্ক
ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এবার যুক্তরাজ্যের নতুন এক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটির সরকার চায়, তদন্তের স্বার্থে অ্যাপল তাদের ব্যবহারকারীদের সুরক্ষিত তথ্যে প্রবেশাধিকার দিক। তবে এই সিদ্ধান্ত অ্যাপল ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা নীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় “ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ারস অ্যাক্ট”-এর আওতায় অ্যাপলকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ দিয়েছে। এই আইনের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহকদের তথ্য চাইতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানটি বাধ্য থাকবে তা সরবরাহ করতে। সরকারের যুক্তি, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তথ্য পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
অ্যাপলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী?
অ্যাপল তার ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। ‘অ্যাডভান্সড ডাটা প্রোটেকশন’ নামে পরিচিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া তৃতীয় পক্ষ সেই তথ্য দেখতে পারে না, এমনকি অ্যাপল নিজেও নয়।
তবে নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সরকারের কাছে সরাসরি চলে যেতে পারে, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর নীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি অ্যাপল এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়, তাহলে অন্যান্য সরকারও একই ধরনের দাবি করতে পারে।
এছাড়া প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, গোপনীয়তা নীতির এই পরিবর্তন সাইবার অপরাধীদের জন্যও সুযোগ তৈরি করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হলে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, অনলাইন প্রতারণা ও ডিজিটাল অপরাধের হার বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে।
অ্যাপলের প্রতিক্রিয়া
এর আগে অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল, যেখানে কোম্পানিটিকে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল করতে বলা হয়েছিল। অ্যাপল সবসময় ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছে। তবে যুক্তরাজ্যের নতুন আইনের কারণে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শেষ কথা
প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ প্রযুক্তির ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার নীতির ওপর সরাসরি আঘাত হানতে পারে। এখন দেখার বিষয়, অ্যাপল এই চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করে এবং ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।