নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট JN.1 নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ, বাংলাদেশ প্রস্তুত তো?

- Update Time : ০৯:৪৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
- / 22
বিশ্বজুড়ে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোভিড-১৯, এবার নতুন রূপে — JN.1 ভ্যারিয়েন্ট। একদিকে এই ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত ছড়িয়ে পড়া, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে কোভিড টেস্টিং ব্যবস্থা নিয়ে তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক গাফিলতির প্রমাণ — যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের জন্যও একটি গুরুত্ববহ সতর্কবার্তা।
JN.1 ভ্যারিয়েন্ট: দ্রুত ছড়ানো ও বেশি সংক্রামক
কম্বোডিয়া সহ বিভিন্ন দেশে JN.1 দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে “Variant of Interest” হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি আগের তুলনায়:
- বেশি সংক্রামক
- দ্রুত ইমিউন সিস্টেম ভেদ করতে সক্ষম
- উপসর্গ অনেকটাই সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের মতো: জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, বমি, সর্দি
কম্বোডিয়ার জনপ্রিয় গায়ক খেম সম্প্রতি JN.1 এ আক্রান্ত হন এবং জানান, তার আগের কোভিড সংক্রমণের তুলনায় এবার অবস্থা ছিল আরও গুরুতর।
ভ্যাকসিনই এখনো প্রধান রক্ষাকবচ
কম্বোডিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আহ্বান, পুনরায় টিকা গ্রহণ করুন, বিশেষ করে:
- গর্ভবতী নারীরা ও কম প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা
- বয়স্করা
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্তরা
সোর্স – khmertimeskh
যুক্তরাজ্যে কোভিড টেস্টিং ব্যর্থতা
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের কোভিড তদন্তে উঠে এসেছে গুরুতর ব্যর্থতার প্রমাণ। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে দুই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী — স্যার পল নার্স ও স্যার পিটার র্যাটক্লিফ, তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানকক-কে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন যেন সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়মিত টেস্ট করা হয়।
কিন্তু সরকার এই আহ্বান উপেক্ষা করে। চিঠির উত্তর আসে প্রায় তিন মাস পরে, তাও একজন জুনিয়র কর্মকর্তার স্বাক্ষরে — যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের টেস্টিং প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গাফিলতির ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দ্রুত বেড়ে যায় হাসপাতাল ও কেয়ার হোমগুলোতে।
ক্রিক ইনস্টিটিউটের অবদান ও সরকারের অবহেলা
Francis Crick Institute তখনই নিজস্ব ল্যাবে কোভিড টেস্ট চালু করে, যেখানে প্রতিদিন ৪,০০০ টেস্ট করার সক্ষমতা ছিল। আরও সরকারি সহায়তা পেলে তা ১০,০০০-এ উন্নীত করা যেত। কিন্তু সরকারের অগ্রাধিকার ছিল বেসরকারি লাইটহাউস ল্যাব স্থাপন, যেখানে সময় লেগেছে, এবং প্রাথমিক পর্যায়ে তা কাজে আসেনি।
স্যার নার্স বলেন, “সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক ল্যাবগুলোর ক্ষমতাকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি।
বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা ও করণীয়
এখনই সময় বাংলাদেশের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ও কার্যকর প্রস্তুতির:
- পুনরায় টিকা প্রদান কর্মসূচি
- স্বাস্থ্যকর্মীদের টেস্টিং চালু রাখা
- প্রত্যন্ত এলাকায় সচেতনতা ও স্বাস্থ্য সেবা জোরদার
- স্থানীয় গবেষণা ল্যাবগুলোকে সক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করা
প্রস্তুত থাকুন, নিরব থাকবেন না
যদি সরকার, বিশেষজ্ঞ, এবং জনগণ একসাথে সচেতন না হয়, তাহলে JN.1 বা ভবিষ্যতের যেকোনো ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠতে পারে নতুন মহামারির কারণ। আর প্রতিটি বিলম্ব হতে পারে জীবনের জন্য বিপজ্জনক।
সোর্স – bbc