Dhaka ১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ: আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ!

  • Update Time : ০৯:২৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 37

দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি, অফিস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শুরু হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হামলা চালায়। এসব হামলার মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শামীম ওসমান, হাসানাত আবদুল্লাহ, আমির হোসেন আমু, শাহরিয়ার আলম এবং অন্যান্য নেতাদের বাসভবনও লক্ষ্যবস্তু হয়।

বিক্ষোভের মাত্রা বৃদ্ধি

গত কয়েকদিন ধরে বেড়ে যাওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, লক্ষীপুর, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, যশোরসহ ১১টি জেলা এ হামলার শিকার হয়েছে। বিশেষ করে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

নোয়াখালী ও ভোলায় হামলা

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ছাত্র-জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলাকারীরা “কাউয়া কাদেরের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও” স্লোগান দিয়ে বাড়ি ভাঙচুর করে। ভোলায় সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বাসভবনেও হামলা হয়, যেখানে গভীর রাতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং হামলাকারীরা গান বাজিয়ে নাচতে থাকে।

ঝালকাঠি ও নারায়ণগঞ্জে হামলা

ঝালকাঠি শহরের সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর ঘটে, পাশাপাশি তার স্ত্রীর মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার পর, আওয়ামী লীগের স্মৃতিবিজড়িত ভবনগুলোও লক্ষ্যবস্তু হয়।

বরিশাল, রাজশাহী, গাইবান্ধায় হামলা

বরিশালে সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বাড়িতে বুলডোজার দিয়ে হামলা করা হয়। রাজশাহীর বাঘায় সাবেক মন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাড়ি ভাঙচুর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওপর হামলা হয়। গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও জেলা ভবনেও হামলা চালানো হয়।

পিরোজপুর, নওগাঁ ও নাটোরে হামলা

পিরোজপুরে সাবেক মেয়রের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের অফিসও ভাঙচুর করা হয়। নওগাঁতে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়, এবং নাটোরে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়।

ফেনী, কুমিল্লা ও বগুড়ায় হামলা

ফেনীতে সাবেক এমপিদের বাড়ি এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়, যেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটে। কুমিল্লায় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া হয় এবং বগুড়ায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়।

রাজনীতিকরা কি বলছেন?

এ হামলাগুলোর মধ্যে দেশীয় রাজনীতির উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক নেতারা এ ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করছেন, এবং সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে এসব হামলা প্রতিরোধ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেষ কথা

দেশব্যাপী চলমান সহিংসতা এবং ভাঙচুরের ঘটনা রাজনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক সঙ্কট এবং বিক্ষোভের কারণে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারের উদ্যোগ এবং রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।

TrendBDNews

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ: আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ!

Update Time : ০৯:২৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি, অফিস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শুরু হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হামলা চালায়। এসব হামলার মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শামীম ওসমান, হাসানাত আবদুল্লাহ, আমির হোসেন আমু, শাহরিয়ার আলম এবং অন্যান্য নেতাদের বাসভবনও লক্ষ্যবস্তু হয়।

বিক্ষোভের মাত্রা বৃদ্ধি

গত কয়েকদিন ধরে বেড়ে যাওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, লক্ষীপুর, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, যশোরসহ ১১টি জেলা এ হামলার শিকার হয়েছে। বিশেষ করে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

নোয়াখালী ও ভোলায় হামলা

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ছাত্র-জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলাকারীরা “কাউয়া কাদেরের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও” স্লোগান দিয়ে বাড়ি ভাঙচুর করে। ভোলায় সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বাসভবনেও হামলা হয়, যেখানে গভীর রাতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং হামলাকারীরা গান বাজিয়ে নাচতে থাকে।

ঝালকাঠি ও নারায়ণগঞ্জে হামলা

ঝালকাঠি শহরের সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর ঘটে, পাশাপাশি তার স্ত্রীর মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার পর, আওয়ামী লীগের স্মৃতিবিজড়িত ভবনগুলোও লক্ষ্যবস্তু হয়।

বরিশাল, রাজশাহী, গাইবান্ধায় হামলা

বরিশালে সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বাড়িতে বুলডোজার দিয়ে হামলা করা হয়। রাজশাহীর বাঘায় সাবেক মন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাড়ি ভাঙচুর এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওপর হামলা হয়। গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও জেলা ভবনেও হামলা চালানো হয়।

পিরোজপুর, নওগাঁ ও নাটোরে হামলা

পিরোজপুরে সাবেক মেয়রের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের অফিসও ভাঙচুর করা হয়। নওগাঁতে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়, এবং নাটোরে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়।

ফেনী, কুমিল্লা ও বগুড়ায় হামলা

ফেনীতে সাবেক এমপিদের বাড়ি এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়, যেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটে। কুমিল্লায় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া হয় এবং বগুড়ায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়।

রাজনীতিকরা কি বলছেন?

এ হামলাগুলোর মধ্যে দেশীয় রাজনীতির উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক নেতারা এ ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করছেন, এবং সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে এসব হামলা প্রতিরোধ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেষ কথা

দেশব্যাপী চলমান সহিংসতা এবং ভাঙচুরের ঘটনা রাজনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক সঙ্কট এবং বিক্ষোভের কারণে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারের উদ্যোগ এবং রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।

TrendBDNews