আমরা কোরবানির পশু দিচ্ছি না — আমরা নিজেরাই কোরবানি হয়ে যাচ্ছি !

- Update Time : ০৪:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
- / 10
যখন পুরো মুসলিম বিশ্ব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন গাজা-র ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে আসছে এক মর্মান্তিক বার্তা:
“আমরা কোরবানির পশু দিচ্ছি না — আমরা নিজেরাই কোরবানি হয়ে যাচ্ছি।”
Mondoweiss -এ প্রকাশিত এক হৃদয়স্পর্শী ব্যক্তিগত বিবরণে উঠে এসেছে — কীভাবে চার বছরের টানা যুদ্ধ, অবরোধ ও ক্ষুধার কারণে গাজার মানুষ ঈদের ধর্মীয় অনুশাসন পালনের সব পথ হারিয়ে ফেলেছে।
কোরবানির পশুর বদলে মানুষ
এক সময় গাজার পরিবারগুলো ঈদের মাসখানেক আগেই উধহিয়া (কোরবানির পশু) কিনত, ভালোবাসায় লালন করত, ঈদের দিন সকালবেলা নামাজ শেষে কোরবানি করত এবং সেই মাংস গরীব ও প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলিয়ে দিত।
আজ সেই গাজায় নেই কোনো পশু, নেই কোনো উৎসব।
“এটা শুধু কোরবানি নয়, এটা ছিল সহানুভূতির, একাত্মতার, উদারতার প্রতীক,” লেখক লিখেছেন।
তবে এখন:
- $৬ ডলারের মাংসের কেজি দাঁড়িয়েছে $১৫০-এরও বেশি।
- স্থানীয় খামারগুলো ধ্বংস, গবাদিপশু নেই বললেই চলে।
- অধিকাংশ পরিবার কয়েক মাস ধরেই মাংসের স্বাদ পায়নি।
- এমনকি ক্যানজাত খাবার-ও এখন বিলাসিতা।
শিশুদের চোখে যুদ্ধের বাস্তবতা
একটি দৃশ্য বিশেষভাবে হৃদয় ছুঁয়ে যায়, যখন ছোট্ট আহমাদ বলে:
“আমার মুরগিগুলো আমাদের কোরবানি হবে না। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমি ওদের লালন করছি। ওদেরও আমার মতো বাঁচতে হবে।”
একটি নিষ্পাপ শিশু তার শেষ আশাটুকু আঁকড়ে ধরে রেখেছে — যেন সে জানে, এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতার মধ্যে কিছুই নিরাপদ নয়।
ঈদ নেই, আছে বেঁচে থাকার লড়াই
একসময় ঈদের সকালে মাংস ভাজি, অতিথিদের আনাগোনা, টাকবিরের ধ্বনি, নতুন পোশাক — এসবই ছিল গাজার ঈদের চিত্র। এখন সেই একই দিনে:
- শিশুরা মারা যাচ্ছে,
- পরিবারগুলো ধ্বংসস্তূপে বসবাস করছে,
- বহু মানুষ খাদ্যবিহীন অবস্থায় দিন পার করছে,
- অনেকের কণ্ঠে শুধু একটি প্রার্থনা: “এই ঈদে যেন অন্তত একটি খাবার ভাগ্যে জোটে।”
প্রতিবেদনের শেষ লাইনে উঠে আসে এক তীব্র অথচ নিঃশব্দ আর্তনাদ:
“যখন মুসলিম বিশ্ব কোরবানির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, গাজা তখন শুধু বেঁচে থাকার লড়াই করছে।”
“যখন মুসলিমরা পশু কোরবানি দিচ্ছে, গাজার মানুষ নিজেরাই কোরবানি হয়ে পড়ছে।”