Dhaka ০৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
শিরোনাম :

বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিল

  • Update Time : ১১:০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • / 80

দেশের খাদ্য মজুত বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের প্রতিষ্ঠান মেসার্স পাত্তাভি অ্যাগ্রো ফুডস লিমিটেডকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন চালের দর পড়েছে ৪২৯.৫৫ মার্কিন ডলার। এ হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় বাজারে রাইস ব্রান তেল ও মসুর ডাল কেনা হবে

সভায় মোট সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল এবং ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এই দুটি প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে তেল ও ডালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত

এছাড়াও, সভায় আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে পৃথক দুটি প্রস্তাবের মাধ্যমে এই এলএনজি সংগ্রহ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারে সরকারের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ সরকার দেশের খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। গত কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহে অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সরকার এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটায় বাংলাদেশও এর প্রভাব মোকাবিলা করছে। এই প্রেক্ষাপটে চাল, তেল, ডাল ও এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় আরও আলোচনা হয় ভবিষ্যতে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে। বিশেষ করে, স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং বিকল্প সরবরাহ চেইন গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাদের জন্য এই পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিল

Update Time : ১১:০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

দেশের খাদ্য মজুত বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের প্রতিষ্ঠান মেসার্স পাত্তাভি অ্যাগ্রো ফুডস লিমিটেডকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন চালের দর পড়েছে ৪২৯.৫৫ মার্কিন ডলার। এ হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় বাজারে রাইস ব্রান তেল ও মসুর ডাল কেনা হবে

সভায় মোট সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল এবং ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এই দুটি প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে তেল ও ডালের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত

এছাড়াও, সভায় আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে পৃথক দুটি প্রস্তাবের মাধ্যমে এই এলএনজি সংগ্রহ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারে সরকারের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ সরকার দেশের খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। গত কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহে অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সরকার এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটায় বাংলাদেশও এর প্রভাব মোকাবিলা করছে। এই প্রেক্ষাপটে চাল, তেল, ডাল ও এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় আরও আলোচনা হয় ভবিষ্যতে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে। বিশেষ করে, স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং বিকল্প সরবরাহ চেইন গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাদের জন্য এই পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।