Dhaka ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

জায়মা রহমান: বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সম্ভাবনা নাকি রাজনৈতিক কৌশল?

  • Update Time : ১০:৩১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 41

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা রহমান রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি তার আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশের সূচনা হতে পারে।

জায়মার রাজনৈতিক প্রবেশ: গুঞ্জন নাকি বাস্তবতা?

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশত্যাগ করেন তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন। তার মেয়ে জায়মা রহমান ব্যারিস্টার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়লেও, রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে তাকে ঘিরে সবসময়ই আলোচনা ছিল। ২০১৯ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করার পর থেকেই রাজনীতিতে তার ভূমিকা নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে।

ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে অংশগ্রহণ

‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা অংশ নেন। এবার এই অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন জায়মা রহমান। মূলত, এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারিক কারণে তারেক রহমান অংশ নিতে না পারায়, তার বদলে তার কন্যা জায়মা রহমান যাচ্ছেন।

নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা কতটুকু?

জায়মা রহমানের রাজনীতিতে প্রবেশ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, তিনি দলে নতুন নেতৃত্বের সূচনা করতে পারেন। আবার অনেকের মতে, শুধুমাত্র একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাকে বিএনপির নেতৃত্বের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন বলেন, “বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক পরিবারে ধারাবাহিক নেতৃত্ব দেখা যায়, যেমন ভারতের গান্ধী পরিবার বা পাকিস্তানের ভুট্টো পরিবার। বাংলাদেশেও জিয়া পরিবার থেকে নতুন নেতৃত্ব আসা স্বাভাবিক। তবে জায়মার ভূমিকা কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।”

বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ মনে করেন, “জায়মা রহমান দলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে পারেন। তিনি তরুণদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবেন, যা বিএনপির জন্য ইতিবাচক হতে পারে।”

অন্যদিকে, দলীয় একটি অংশ মনে করে, বিএনপির বর্তমান অবস্থা এবং দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা সহজ কাজ নয়।

রাজনীতিতে জায়মার ভবিষ্যৎ

জায়মা রহমানের রাজনীতিতে প্রবেশ নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও, তার সাম্প্রতিক কার্যক্রম ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তিনি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হচ্ছেন। বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন কি না, তা নির্ভর করবে তার পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে পারিবারিক উত্তরাধিকারের প্রভাব রয়েছে। শেখ হাসিনা, তারেক রহমান—এমন উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। যদি জায়মা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হন, তবে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হবে।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

জায়মা রহমান: বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সম্ভাবনা নাকি রাজনৈতিক কৌশল?

Update Time : ১০:৩১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা রহমান রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি তার আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশের সূচনা হতে পারে।

জায়মার রাজনৈতিক প্রবেশ: গুঞ্জন নাকি বাস্তবতা?

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশত্যাগ করেন তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন। তার মেয়ে জায়মা রহমান ব্যারিস্টার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়লেও, রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে তাকে ঘিরে সবসময়ই আলোচনা ছিল। ২০১৯ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করার পর থেকেই রাজনীতিতে তার ভূমিকা নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে।

ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে অংশগ্রহণ

‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা অংশ নেন। এবার এই অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন জায়মা রহমান। মূলত, এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারিক কারণে তারেক রহমান অংশ নিতে না পারায়, তার বদলে তার কন্যা জায়মা রহমান যাচ্ছেন।

নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা কতটুকু?

জায়মা রহমানের রাজনীতিতে প্রবেশ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, তিনি দলে নতুন নেতৃত্বের সূচনা করতে পারেন। আবার অনেকের মতে, শুধুমাত্র একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাকে বিএনপির নেতৃত্বের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন বলেন, “বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক পরিবারে ধারাবাহিক নেতৃত্ব দেখা যায়, যেমন ভারতের গান্ধী পরিবার বা পাকিস্তানের ভুট্টো পরিবার। বাংলাদেশেও জিয়া পরিবার থেকে নতুন নেতৃত্ব আসা স্বাভাবিক। তবে জায়মার ভূমিকা কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।”

বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ মনে করেন, “জায়মা রহমান দলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে পারেন। তিনি তরুণদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবেন, যা বিএনপির জন্য ইতিবাচক হতে পারে।”

অন্যদিকে, দলীয় একটি অংশ মনে করে, বিএনপির বর্তমান অবস্থা এবং দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা সহজ কাজ নয়।

রাজনীতিতে জায়মার ভবিষ্যৎ

জায়মা রহমানের রাজনীতিতে প্রবেশ নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও, তার সাম্প্রতিক কার্যক্রম ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তিনি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হচ্ছেন। বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন কি না, তা নির্ভর করবে তার পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে পারিবারিক উত্তরাধিকারের প্রভাব রয়েছে। শেখ হাসিনা, তারেক রহমান—এমন উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। যদি জায়মা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হন, তবে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হবে।