জাতিসংঘের প্রতিবেদন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ জনের বেশি নিহত, ১২-১৩ শতাংশ শিশু

- Update Time : ০৪:২৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 37
জাতিসংঘ সম্প্রতি বাংলাদেশে জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে প্রায় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, এবং এ সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল।
গণঅভ্যুত্থানে নিহতের সংখ্যা
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, নিহতদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন হলেও নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যাটি ১৪০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশের কর্মকর্তাও আছেন। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, এই গণঅভ্যুত্থানে তাদের ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
আহতদের অবস্থা
এছাড়া, আহতদের মধ্যে অনেকেই নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছেন। নিরাপত্তাবাহিনীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এমনকি, এসব হামলায় অনেকেই দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সরকারের ভূমিকা
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই গণঅভ্যুত্থানে সাবেক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয় ছিল। তাদের মধ্যে একাধিক সংঘাতপূর্ণ এবং সহিংস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা হয়েছিল। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলি ঘটেছে।
বিক্ষোভের পটভূমি
গত বছর, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ও বিক্ষোভের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল, যা তীব্র হয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংসতার সৃষ্টি করে। প্রতিবেদনটি বলছে, এই আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছিল, যার ফলে গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটেছিল।
প্রতিবেদনটির গুরুত্ব
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার উপর নতুন আলো ফেলেছে। বিশেষত শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন, যেগুলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম স্পষ্ট উদাহরণ, তা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
উপসংহার
এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও এক ভয়াবহ দিক উন্মোচন করেছে। গণঅভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে মানুষের মৃত্যু ও আঘাত, বিশেষত শিশুদের প্রতি সহিংসতা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সতর্ক হতে বাধ্য করবে। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ও আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করবে, যার মাধ্যমে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।