Dhaka ১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র: ঐক্যের প্রশ্নে দলগুলোর অবস্থান

  • Update Time : ১১:১৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 53

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে বিতর্ক: ঐক্যের আহ্বান দলগুলোর

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে পাঁচ মাস পর ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপির প্রশ্ন, এতদিন পর কেন এই উদ্যোগ? অন্যদিকে, জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, ঘোষণাপত্র প্রণয়ন গুরুত্বপূর্ণ তবে এটি হতে হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময় হয়। বিএনপি, জামায়াত, গণসংহতি আন্দোলন, এবং আরও কয়েকটি দলের প্রতিনিধি এই বৈঠকে অংশ নেন। সিপিবি উপস্থিত না থাকলেও তাদের প্রতিক্রিয়া এসেছে।

বিএনপির প্রশ্ন ও পরামর্শ

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নেওয়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পর হঠাৎ ঘোষণাপত্রের প্রয়োজন কেন, এটি আমাদের বুঝতে হবে। তড়িঘড়ি কোনো সিদ্ধান্তে যেন ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য দুর্বল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ঐতিহাসিক দলিল প্রণয়ন হলে সেটি আমরা অবশ্যই সম্মান করি। তবে, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সবার মতামত নিয়ে এটি হতে হবে।”

জামায়াতের অবস্থান

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ঘোষণাপত্র একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। তবে এটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে। এই ধরনের দলিল ঐক্যকে শক্তিশালী করতে পারে।”

মতবিনিময়ে প্রস্তাব ও আলোচনা

বৈঠকে অংশ নেওয়া আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, “সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি কার্যকরী দলিল প্রণয়নের প্রস্তাব এসেছে। এটি করতে সময় লাগলেও যেন অযথা দেরি না হয়।” তিনি আরও বলেন, “কমিটি গঠন করে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।”

অনুপস্থিত সিপিবি ও ১২ দলীয় জোটের ক্ষোভ

সিপিবি আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে যোগ দেয়নি। অন্যদিকে, বিএনপির মিত্র ১২ দলীয় জোট আমন্ত্রণ না পাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা দাবি করেছে, তাদের উপেক্ষা করা রাজনৈতিক ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর।

জাতীয় ঐক্যের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, সেটি ধরে রাখা এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ঐক্যকে শক্তিশালী করতে গণঐক্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই।”

উপসংহার

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেও দলগুলো ঐক্যের পক্ষে। এই উদ্যোগ সফল করতে সকলের অংশগ্রহণ ও মতামতের প্রতিফলন জরুরি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে এটি কেবল জাতীয় ঐক্যকে দৃঢ় করবে না, বরং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র: ঐক্যের প্রশ্নে দলগুলোর অবস্থান

Update Time : ১১:১৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে বিতর্ক: ঐক্যের আহ্বান দলগুলোর

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে পাঁচ মাস পর ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপির প্রশ্ন, এতদিন পর কেন এই উদ্যোগ? অন্যদিকে, জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, ঘোষণাপত্র প্রণয়ন গুরুত্বপূর্ণ তবে এটি হতে হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময় হয়। বিএনপি, জামায়াত, গণসংহতি আন্দোলন, এবং আরও কয়েকটি দলের প্রতিনিধি এই বৈঠকে অংশ নেন। সিপিবি উপস্থিত না থাকলেও তাদের প্রতিক্রিয়া এসেছে।

বিএনপির প্রশ্ন ও পরামর্শ

বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নেওয়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পর হঠাৎ ঘোষণাপত্রের প্রয়োজন কেন, এটি আমাদের বুঝতে হবে। তড়িঘড়ি কোনো সিদ্ধান্তে যেন ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য দুর্বল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ঐতিহাসিক দলিল প্রণয়ন হলে সেটি আমরা অবশ্যই সম্মান করি। তবে, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সবার মতামত নিয়ে এটি হতে হবে।”

জামায়াতের অবস্থান

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ঘোষণাপত্র একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। তবে এটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে। এই ধরনের দলিল ঐক্যকে শক্তিশালী করতে পারে।”

মতবিনিময়ে প্রস্তাব ও আলোচনা

বৈঠকে অংশ নেওয়া আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, “সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি কার্যকরী দলিল প্রণয়নের প্রস্তাব এসেছে। এটি করতে সময় লাগলেও যেন অযথা দেরি না হয়।” তিনি আরও বলেন, “কমিটি গঠন করে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।”

অনুপস্থিত সিপিবি ও ১২ দলীয় জোটের ক্ষোভ

সিপিবি আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে যোগ দেয়নি। অন্যদিকে, বিএনপির মিত্র ১২ দলীয় জোট আমন্ত্রণ না পাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা দাবি করেছে, তাদের উপেক্ষা করা রাজনৈতিক ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর।

জাতীয় ঐক্যের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, সেটি ধরে রাখা এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ঐক্যকে শক্তিশালী করতে গণঐক্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই।”

উপসংহার

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেও দলগুলো ঐক্যের পক্ষে। এই উদ্যোগ সফল করতে সকলের অংশগ্রহণ ও মতামতের প্রতিফলন জরুরি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে এটি কেবল জাতীয় ঐক্যকে দৃঢ় করবে না, বরং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।