Dhaka ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
শিরোনাম :

নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ

  • Update Time : ১১:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 27

বাংলাদেশের জন্য এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হয়েছিল হতাশাজনকভাবে। প্রথম ম্যাচে হারের পর টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছিল একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু রাচিন রবীন্দ্রর ঝড়ো সেঞ্চুরি এবং নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী পারফরম্যান্সের কাছে ৫ উইকেটে হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে। এই হার দিয়ে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫-এর যাত্রা শেষ হলো। অন্যদিকে, টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে নিউজিল্যান্ড।

বাংলাদেশের ব্যাটিং: শান্তর ফিফটি, কিন্তু পর্যাপ্ত রান নয়
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। শুরুটা বাংলাদেশের জন্য আশাব্যঞ্জক ছিল, কিন্তু দ্রুতই উইকেট হারিয়ে তারা চাপে পড়ে। বাংলাদেশের ইনিংসের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি ১১০ বলে ৭৭ রানের একটি দৃঢ় ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, জাকের আলী অনিক ৫৫ বলে ৪৫ রান করে দলের রান সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন।

তবে, নিউজিল্যান্ডের বোলাররা নিয়মিত উইকেট শিকারে সফল হয়। বিশেষ করে মাইকেল ব্রেসওয়েল ৪ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশের রান প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রান সংগ্রহ করে, যা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

নিউজিল্যান্ডের জয়: রবীন্দ্রর সেঞ্চুরি এবং কনওয়ের অবদান
২৩৭ রানের টার্গেটে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিন আহমেদের বলে উইল ইয়ং বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এরপর কেইন উইলিয়ামসন এবং ডেভন কনওয়ে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনলেও, চতুর্থ ওভারে উইলিয়ামসন (৫ রান) আউট হয়ে নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেন।

কিন্তু এরপরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে। তারা ৫৭ রানের জুটি গড়ে দলকে পুনরায় ট্র্যাকে নিয়ে আসেন। কনওয়ে ৪৫ বলে ৩০ রান করার পর মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হলে, রবীন্দ্র ক্রিজে টম লাথামকে সঙ্গী করে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ সুগম করেন।

রবীন্দ্র তার সাবলীল ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তিনি ১০৫ বলে ১১২ রান করে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। রবীন্দ্রর আউট হওয়ার পর টম লাথাম ৭৬ বলে ৫৫ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। শেষ পর্যন্ত গ্লেন ফিলিপস এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল ২৩ বল হাতে রেখে নিউজিল্যান্ডের জয় পাকাপোক্ত করেন।

বাংলাদেশের বিদায়: কোথায় ভুল হলো?
বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ শুরুটা ভালো করলেও, মাঝারি ওভারগুলোতে রান নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। বিশেষ করে রবীন্দ্র এবং লাথামের পার্টনারশিপ বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও, বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ পর্যাপ্ত রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়, যা শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।

সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের পারফরম্যান্স দেখে স্পষ্ট যে, তারা এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অন্যতম ফেভারিট। রাচিন রবীন্দ্রর ফর্ম এবং বোলিং ইউনিটের সমন্বিত পারফরম্যান্স তাদেরকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যৎ
এই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেও, বাংলাদেশের কিছু ইতিবাচক দিক দেখা গেছে। অধিনায়ক শান্তর ফিফটি এবং তাসকিনের বোলিং পারফরম্যান্স আশার আলো দেখায়। তবে, টুর্নামেন্টের বড় ম্যাচগুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরও উন্নতি করতে হবে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় নিলেও, বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে আরও বড় অর্জনের স্বপ্ন দেখতে পারে। আগামী টুর্নামেন্টগুলোর জন্য দলকে প্রস্তুত করতে এখনই কাজ শুরু করা জরুরি।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ

Update Time : ১১:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের জন্য এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হয়েছিল হতাশাজনকভাবে। প্রথম ম্যাচে হারের পর টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছিল একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু রাচিন রবীন্দ্রর ঝড়ো সেঞ্চুরি এবং নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী পারফরম্যান্সের কাছে ৫ উইকেটে হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে। এই হার দিয়ে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫-এর যাত্রা শেষ হলো। অন্যদিকে, টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে নিউজিল্যান্ড।

বাংলাদেশের ব্যাটিং: শান্তর ফিফটি, কিন্তু পর্যাপ্ত রান নয়
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। শুরুটা বাংলাদেশের জন্য আশাব্যঞ্জক ছিল, কিন্তু দ্রুতই উইকেট হারিয়ে তারা চাপে পড়ে। বাংলাদেশের ইনিংসের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি ১১০ বলে ৭৭ রানের একটি দৃঢ় ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, জাকের আলী অনিক ৫৫ বলে ৪৫ রান করে দলের রান সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন।

তবে, নিউজিল্যান্ডের বোলাররা নিয়মিত উইকেট শিকারে সফল হয়। বিশেষ করে মাইকেল ব্রেসওয়েল ৪ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশের রান প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রান সংগ্রহ করে, যা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

নিউজিল্যান্ডের জয়: রবীন্দ্রর সেঞ্চুরি এবং কনওয়ের অবদান
২৩৭ রানের টার্গেটে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিন আহমেদের বলে উইল ইয়ং বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এরপর কেইন উইলিয়ামসন এবং ডেভন কনওয়ে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনলেও, চতুর্থ ওভারে উইলিয়ামসন (৫ রান) আউট হয়ে নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেন।

কিন্তু এরপরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রাচিন রবীন্দ্র এবং ডেভন কনওয়ে। তারা ৫৭ রানের জুটি গড়ে দলকে পুনরায় ট্র্যাকে নিয়ে আসেন। কনওয়ে ৪৫ বলে ৩০ রান করার পর মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হলে, রবীন্দ্র ক্রিজে টম লাথামকে সঙ্গী করে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ সুগম করেন।

রবীন্দ্র তার সাবলীল ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তিনি ১০৫ বলে ১১২ রান করে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। রবীন্দ্রর আউট হওয়ার পর টম লাথাম ৭৬ বলে ৫৫ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। শেষ পর্যন্ত গ্লেন ফিলিপস এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল ২৩ বল হাতে রেখে নিউজিল্যান্ডের জয় পাকাপোক্ত করেন।

বাংলাদেশের বিদায়: কোথায় ভুল হলো?
বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ শুরুটা ভালো করলেও, মাঝারি ওভারগুলোতে রান নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। বিশেষ করে রবীন্দ্র এবং লাথামের পার্টনারশিপ বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও, বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ পর্যাপ্ত রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়, যা শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।

সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের পারফরম্যান্স দেখে স্পষ্ট যে, তারা এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অন্যতম ফেভারিট। রাচিন রবীন্দ্রর ফর্ম এবং বোলিং ইউনিটের সমন্বিত পারফরম্যান্স তাদেরকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যৎ
এই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেও, বাংলাদেশের কিছু ইতিবাচক দিক দেখা গেছে। অধিনায়ক শান্তর ফিফটি এবং তাসকিনের বোলিং পারফরম্যান্স আশার আলো দেখায়। তবে, টুর্নামেন্টের বড় ম্যাচগুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরও উন্নতি করতে হবে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় নিলেও, বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে আরও বড় অর্জনের স্বপ্ন দেখতে পারে। আগামী টুর্নামেন্টগুলোর জন্য দলকে প্রস্তুত করতে এখনই কাজ শুরু করা জরুরি।