Dhaka ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

বিপর্যস্ত নিঝুমদ্বীপ, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া: উপকূলজুড়ে জলাবদ্ধতা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া

ট্রেন্ডবিডিনিউজ ডেস্ক
  • Update Time : ০১:২৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 16

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপ এবং অমাবস্যার প্রভাবে ভয়াবহ জোয়ারে প্লাবিত হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়া ও এর অন্তর্গত নিঝুমদ্বীপ। নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের হাজারো মানুষ এখন পানিবন্দি।

নৌ যোগাযোগ বন্ধ, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া

বুধবার (২৮ মে) ভোর থেকেই শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি দুপুরের পর থেকে টানা বৃষ্টিপাতে রূপ নেয়। সাগরে প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের সব ধরনের নৌ যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন TrendBDNews-কে বলেন,

“তিন নম্বর সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।”

পুরো নিঝুমদ্বীপ জলে তলিয়ে, বিপদে ৩০ হাজার মানুষ

অপরদিকে, নিঝুমদ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কায় পুরো দ্বীপ প্লাবিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে মোল্লা গ্রাম, বান্ধাখালী, পূর্ব মুন্সী, গুচ্ছগ্রাম ও মদিনা গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ঘরে ঘরে ঢুকেছে জোয়ারের পানি, বিদ্যুৎ ও খাবার সংকটে পড়েছেন স্থানীয়রা।

নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বলেন,

“সব রিসোর্ট ও দোকান তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। রাতে যদি আবার জোয়ার হয়, তাহলে বাঁচার উপায় নেই।”

সতর্কবার্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঝোড়ো হাওয়ার সৃষ্টি করতে পারে। ফলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা উপকূলীয় এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের তৎপরতা ও জনগণের উদ্বেগ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী জানিয়েছেন,

“জোয়ারের কারণে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। তবে এখনো পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাসিন্দাদের বেড়িবাঁধের বাইরে অবস্থান না করতে বলা হয়েছে।”

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র এবং ত্রাণ সহায়তার অভাবে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রশাসন

প্রশাসন জানিয়েছে, সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।


🔔 সতর্কবার্তা: উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ, আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখুন এবং বিপদের সময় দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যান।

📲 নতুন তথ্য জানতে TrendBDNews-এর সঙ্গে থাকুন।

ট্যাগ :

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

বিপর্যস্ত নিঝুমদ্বীপ, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া: উপকূলজুড়ে জলাবদ্ধতা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া

Update Time : ০১:২৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপ এবং অমাবস্যার প্রভাবে ভয়াবহ জোয়ারে প্লাবিত হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়া ও এর অন্তর্গত নিঝুমদ্বীপ। নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের হাজারো মানুষ এখন পানিবন্দি।

নৌ যোগাযোগ বন্ধ, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া

বুধবার (২৮ মে) ভোর থেকেই শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি দুপুরের পর থেকে টানা বৃষ্টিপাতে রূপ নেয়। সাগরে প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের সব ধরনের নৌ যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন TrendBDNews-কে বলেন,

“তিন নম্বর সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।”

পুরো নিঝুমদ্বীপ জলে তলিয়ে, বিপদে ৩০ হাজার মানুষ

অপরদিকে, নিঝুমদ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কায় পুরো দ্বীপ প্লাবিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে মোল্লা গ্রাম, বান্ধাখালী, পূর্ব মুন্সী, গুচ্ছগ্রাম ও মদিনা গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ঘরে ঘরে ঢুকেছে জোয়ারের পানি, বিদ্যুৎ ও খাবার সংকটে পড়েছেন স্থানীয়রা।

নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বলেন,

“সব রিসোর্ট ও দোকান তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। রাতে যদি আবার জোয়ার হয়, তাহলে বাঁচার উপায় নেই।”

সতর্কবার্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঝোড়ো হাওয়ার সৃষ্টি করতে পারে। ফলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা উপকূলীয় এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের তৎপরতা ও জনগণের উদ্বেগ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী জানিয়েছেন,

“জোয়ারের কারণে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। তবে এখনো পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাসিন্দাদের বেড়িবাঁধের বাইরে অবস্থান না করতে বলা হয়েছে।”

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র এবং ত্রাণ সহায়তার অভাবে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রশাসন

প্রশাসন জানিয়েছে, সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।


🔔 সতর্কবার্তা: উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ, আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখুন এবং বিপদের সময় দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যান।

📲 নতুন তথ্য জানতে TrendBDNews-এর সঙ্গে থাকুন।