Dhaka ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

প্রধান উপদেষ্টার অভিযোগ, পুলিশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হবে

  • Update Time : ০১:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / 48

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “গত ১৫ বছর ধরে পুলিশকে একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে তারা জনরোষের শিকার হয়েছে। এখন পুলিশকে মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।”

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে এই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বিপিএম, এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

পুলিশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের আহ্বান

ড. ইউনূস বলেন, “পুলিশ জনগণের সেবক, কোনো দলের নয়। গত দেড় দশকে পুলিশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, যা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেছে। এখন সময় এসেছে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে প্রকৃত জনসেবায় নিয়োজিত করা।”

তিনি আরও যোগ করেন, “পুলিশকে অবশ্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আন্তরিক হতে হবে।”

পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ও পদক বিতরণ

এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “আমার পুলিশ, আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ।” উদ্বোধনী দিনেই প্রধান উপদেষ্টা ৬২ জন কৃতি পুলিশ সদস্যকে তাদের অসামান্য অবদানের জন্য পদক প্রদান করেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বিপিএম তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা একটি আধুনিক, জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে কাজ করছি। এই লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা চাই পুলিশ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করুক, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে পায়।”

তিন দিনব্যাপী আয়োজন

এই তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—

  • সেমিনার ও কর্মশালা
  • জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন
  • কমিউনিটি পুলিশিং শক্তিশালীকরণ
  • বিশেষ অভিযান ও সম্মাননা প্রদান

অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপারসহ সকল স্তরের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য বিশ্লেষণ

ড. ইউনূসের এই বক্তব্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি পুলিশ বাহিনীকে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনর্গঠনের ইঙ্গিত। তবে এ লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ কতটা নেওয়া হবে, তা এখন দেখার বিষয়।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

প্রধান উপদেষ্টার অভিযোগ, পুলিশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হবে

Update Time : ০১:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “গত ১৫ বছর ধরে পুলিশকে একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে তারা জনরোষের শিকার হয়েছে। এখন পুলিশকে মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।”

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে এই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বিপিএম, এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

পুলিশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের আহ্বান

ড. ইউনূস বলেন, “পুলিশ জনগণের সেবক, কোনো দলের নয়। গত দেড় দশকে পুলিশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, যা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেছে। এখন সময় এসেছে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে প্রকৃত জনসেবায় নিয়োজিত করা।”

তিনি আরও যোগ করেন, “পুলিশকে অবশ্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আন্তরিক হতে হবে।”

পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ও পদক বিতরণ

এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “আমার পুলিশ, আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ।” উদ্বোধনী দিনেই প্রধান উপদেষ্টা ৬২ জন কৃতি পুলিশ সদস্যকে তাদের অসামান্য অবদানের জন্য পদক প্রদান করেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বিপিএম তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা একটি আধুনিক, জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে কাজ করছি। এই লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা চাই পুলিশ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করুক, যাতে জনগণের আস্থা ফিরে পায়।”

তিন দিনব্যাপী আয়োজন

এই তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—

  • সেমিনার ও কর্মশালা
  • জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন
  • কমিউনিটি পুলিশিং শক্তিশালীকরণ
  • বিশেষ অভিযান ও সম্মাননা প্রদান

অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপারসহ সকল স্তরের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য বিশ্লেষণ

ড. ইউনূসের এই বক্তব্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি পুলিশ বাহিনীকে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনর্গঠনের ইঙ্গিত। তবে এ লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ কতটা নেওয়া হবে, তা এখন দেখার বিষয়।