লেবুর দামে চড়া মূল্য: রমজানে কেন এই সংকট?

- Update Time : ০২:১৭:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
- / 92
রমজান মাসে লেবুর চাহিদা আকাশছোঁয়া। সারা দিন রোজা রাখার পর এক গ্লাস লেবুর শরবত যেন রোজাদারের তৃষ্ণা মিটিয়ে দেয় এক নিমিষে। এই চাহিদার সুযোগে লেবুর দামও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। গত কয়েক দিনে লেবুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, যা ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে গতকাল সোমবার আকারভেদে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। অথচ রমজান শুরুর এক সপ্তাহ আগেও এই একই লেবু বিক্রি হতো ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের মতে, চলতি মৌসুমে লেবুর উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহও কম। এছাড়া রমজানে লেবুর চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি থাকে, যা দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
মোকামে লেবুর দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে প্রভাব
লেবুর মোকামগুলোতেও এবার দাম বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, মোকামে আকারভেদে প্রতি হালি লেবু এখন ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও বড় আকারের লেবু প্রতি হালি বিক্রি হতো ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি খুচরা বাজারে পড়েছে।
রাজধানীর তুরাগ এলাকার নতুনবাজারের লেবু বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, “রমজানে লেবু নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে কাড়াকাড়ি লেগে যায়। শরবত ছাড়াও ইফতারিতে অনেকে লেবু ব্যবহার করেন। তবে দাম বাড়লেও আমাদের লাভ বেশি হচ্ছে না। আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনে আনছি, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।”
কাওরান বাজারের অবস্থা
রাজধানীর অন্যতম বড় খুচরা ও পাইকারি বাজার কাওরান বাজারের লেবু বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, “রমজান শুরুর পর থেকেই লেবুর দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। এবার লেবুর বড় মোকাম সিলেট, মৌলভীবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দাম বেশি। রমজানের শুরুর দিকে চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশি থাকে, কিন্তু পরে চাহিদা কমে গেলে দামও কমে যায়।”
কেন এত দাম?
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার লেবুর উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ সীমিত। অন্যদিকে, রমজানে লেবুর চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যায়। এই দুই কারণেই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া পরিবহন ও জ্বালানি খরচ বৃদ্ধিও দাম বাড়ার পেছনে একটি কারণ।
ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া
লেবুর এ চড়া দামে ক্রেতারা হতাশ। অনেকেই বলছেন, রোজার সময় লেবুর শরবত ছাড়া ইফতারি যেন অসম্পূর্ণ। কিন্তু এত দামে লেবু কেনা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
কীভাবে সামাল দেওয়া যায়?
দাম কমাতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে লেবুর সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া বিকল্প ফল যেমন কমলা বা মাল্টার ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে, যা লেবুর চাহিদা কিছুটা কমাতে পারে।
শেষ কথা
রমজান মাসে লেবুর চাহিদা বাড়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু এত দাম বৃদ্ধি ক্রেতাদের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। ব্যবসায়ী ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় লেবুর সরবরাহ বাড়ানো এবং দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।