Dhaka ০৯:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

রাত জেগে স্মার্টফোন ব্যবহারের ভয়ংকর প্রভাব: সুস্থ থাকতে বদলান অভ্যাস

  • Update Time : ০৭:০৫:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 30

বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেসবুক, গেম, রিল স্ক্রলিং কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখা যেন রাত জাগার নতুন স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই অভ্যাসের রয়েছে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক প্রভাব, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি সারাদিনের কার্যক্ষমতাকেও নষ্ট করে দিতে পারে।

স্মার্টফোনের নীল আলো ও ঘুমের ব্যাঘাত

হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে, যা আমাদের ঘুমের জন্য অপরিহার্য। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয় এবং সার্কাডিয়ান রিদম (জৈবিক ঘড়ি) বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলে ঘন ঘন জেগে ওঠা, সকালে ক্লান্তি অনুভব করা এবং ঘুমের মান খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

রাতের স্ক্রলিং চোখ ও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর

রাতে দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করলে চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা চোখের শুষ্কতা, লালচে ভাব এবং দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, বিছানায় শুয়ে ফোন ব্যবহারের ফলে ‘টেক্সট নেক’ বা সার্ভিকাল স্ট্রেন তৈরি হয়, যা ঘাড় ও মেরুদণ্ডের ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি ঘুমানোর আগে স্ক্রলিং করলে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক বিশ্রাম নিতে পারে না এবং অতিরিক্ত ডোপামিন ও অ্যাড্রেনালিন নিঃসৃত হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

স্মার্টফোন ব্যবহারের মানসিক ও শারীরিক প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নেতিবাচক সংবাদ বা ইমোশনাল কন্টেন্ট দেখলে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) বৃদ্ধি পায়, যা উদ্বেগ, হতাশা এবং অনিদ্রার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি, রাত জেগে ফোন ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে –

  • স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া
  • মনোযোগের ঘাটতি
  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
  • হৃদরোগ ও স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি
  • উৎপাদনশীলতা হ্রাস

সুস্থ ঘুম নিশ্চিত করতে করণীয়

একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও মানসিক প্রশান্তির জন্য রাত জেগে স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি। এ জন্য কিছু কার্যকর উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে:

  1. ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ করুন।
  2. বিনোদনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  3. প্রশান্তিদায়ক সঙ্গীত শোনার মাধ্যমে মনকে শান্ত করুন।
  4. মোবাইল ফোনে নাইট মোড চালু রাখুন, যাতে নীল আলোর প্রভাব কম হয়।

রাতের বেলা স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এখনই সচেতন হোন, স্বাস্থ্যকর রুটিন গড়ে তুলুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

রাত জেগে স্মার্টফোন ব্যবহারের ভয়ংকর প্রভাব: সুস্থ থাকতে বদলান অভ্যাস

Update Time : ০৭:০৫:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেসবুক, গেম, রিল স্ক্রলিং কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখা যেন রাত জাগার নতুন স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই অভ্যাসের রয়েছে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক প্রভাব, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি সারাদিনের কার্যক্ষমতাকেও নষ্ট করে দিতে পারে।

স্মার্টফোনের নীল আলো ও ঘুমের ব্যাঘাত

হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে, যা আমাদের ঘুমের জন্য অপরিহার্য। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয় এবং সার্কাডিয়ান রিদম (জৈবিক ঘড়ি) বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলে ঘন ঘন জেগে ওঠা, সকালে ক্লান্তি অনুভব করা এবং ঘুমের মান খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

রাতের স্ক্রলিং চোখ ও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর

রাতে দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করলে চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা চোখের শুষ্কতা, লালচে ভাব এবং দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, বিছানায় শুয়ে ফোন ব্যবহারের ফলে ‘টেক্সট নেক’ বা সার্ভিকাল স্ট্রেন তৈরি হয়, যা ঘাড় ও মেরুদণ্ডের ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি ঘুমানোর আগে স্ক্রলিং করলে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক বিশ্রাম নিতে পারে না এবং অতিরিক্ত ডোপামিন ও অ্যাড্রেনালিন নিঃসৃত হয়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

স্মার্টফোন ব্যবহারের মানসিক ও শারীরিক প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নেতিবাচক সংবাদ বা ইমোশনাল কন্টেন্ট দেখলে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) বৃদ্ধি পায়, যা উদ্বেগ, হতাশা এবং অনিদ্রার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি, রাত জেগে ফোন ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে –

  • স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া
  • মনোযোগের ঘাটতি
  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
  • হৃদরোগ ও স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি
  • উৎপাদনশীলতা হ্রাস

সুস্থ ঘুম নিশ্চিত করতে করণীয়

একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও মানসিক প্রশান্তির জন্য রাত জেগে স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি। এ জন্য কিছু কার্যকর উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে:

  1. ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ করুন।
  2. বিনোদনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  3. প্রশান্তিদায়ক সঙ্গীত শোনার মাধ্যমে মনকে শান্ত করুন।
  4. মোবাইল ফোনে নাইট মোড চালু রাখুন, যাতে নীল আলোর প্রভাব কম হয়।

রাতের বেলা স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এখনই সচেতন হোন, স্বাস্থ্যকর রুটিন গড়ে তুলুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।