Dhaka ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
শিরোনাম :

সাজেকে ভয়াবহ আগুন: ৯৪টি রিসোর্ট, দোকান ও রেস্তোরাঁ পুড়ে ছাই

  • Update Time : ১২:২০:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 19

রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯৪টি রিসোর্ট, দোকান, রেস্তোরাঁ ও বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আগুনের সূত্রপাত ও বিস্তার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাজেক ইউনিয়নের ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুতগতিতে আগুন আশেপাশের রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালালেও দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস দেরিতে পৌঁছাতে পারে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টার পর বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণ জানান, আগুনে ৩২টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসতঘর, ২০টি দোকানঘর ও ৭টি রেস্তোরাঁ পুড়ে গেছে। এসব স্থাপনার কোনো মালপত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ীরা তাদের জীবিকা হারানোর পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেও বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পর্যটকদের নিরাপত্তা

আগুনের সময় সাজেকে অবস্থানরত পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে দ্রুত তাদের নিরাপদে খাগড়াছড়িতে স্থানান্তর করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। এছাড়াও, সাময়িকভাবে সাজেকে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।

আগুনের কারণ

আগুনের সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত না হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াশ ইয়াসিন ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার ধারণা করছেন, শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রতিক্রিয়া

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানান, সাজেক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত হওয়ায় পানি সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরও আশপাশে পানি ছিটানো হয়েছে যাতে আগুন আবারও ছড়াতে না পারে।

পরবর্তী পদক্ষেপ

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও, আগুন প্রতিরোধে সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সাজেকের এই ঘটনা পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আগুন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।


ট্রেন্ডবিডিনিউজ

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

সাজেকে ভয়াবহ আগুন: ৯৪টি রিসোর্ট, দোকান ও রেস্তোরাঁ পুড়ে ছাই

Update Time : ১২:২০:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৯৪টি রিসোর্ট, দোকান, রেস্তোরাঁ ও বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আগুনের সূত্রপাত ও বিস্তার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাজেক ইউনিয়নের ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুতগতিতে আগুন আশেপাশের রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালালেও দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস দেরিতে পৌঁছাতে পারে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টার পর বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণ জানান, আগুনে ৩২টি রিসোর্ট, ৩৫টি বসতঘর, ২০টি দোকানঘর ও ৭টি রেস্তোরাঁ পুড়ে গেছে। এসব স্থাপনার কোনো মালপত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ীরা তাদের জীবিকা হারানোর পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেও বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পর্যটকদের নিরাপত্তা

আগুনের সময় সাজেকে অবস্থানরত পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে দ্রুত তাদের নিরাপদে খাগড়াছড়িতে স্থানান্তর করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। এছাড়াও, সাময়িকভাবে সাজেকে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।

আগুনের কারণ

আগুনের সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত না হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াশ ইয়াসিন ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার ধারণা করছেন, শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রতিক্রিয়া

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানান, সাজেক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত হওয়ায় পানি সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরও আশপাশে পানি ছিটানো হয়েছে যাতে আগুন আবারও ছড়াতে না পারে।

পরবর্তী পদক্ষেপ

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও, আগুন প্রতিরোধে সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সাজেকের এই ঘটনা পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আগুন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।


ট্রেন্ডবিডিনিউজ