শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল তুলতে গিয়ে শিশু ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা: রংপুরের মিঠাপুকুরে তোলপাড়

- Update Time : ০৪:০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 35
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এক চতুর্থ শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মর্মান্তিক অভিযোগ উঠেছে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে গিয়ে শিশুটি এই নৃশংসতার শিকার হয়। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনার বিবরণ
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর রথিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শিশুটি স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়ির ফুল বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করতে যায়। ফুল তুলতে গিয়ে শিশুটিকে জোর করে ঘরের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। শিশুটির চিৎকার শুনে ফজরের নামাজ শেষ করে বাড়ি ফেরা কয়েকজন মুসল্লি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন।
ঘটনার পর অভিযুক্ত রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তি পালিয়ে যান। শিশুটিকে উদ্ধারের পর তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকায় তাকে প্রথমে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলা ও তদন্ত
মিঠাপুকুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিবরণীতে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। শিশুটির নিরাপত্তা ও চিকিৎসার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই শিশুটির নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য কলঙ্ক। আমরা চাই দোষী ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।”
শিশু সুরক্ষা ও সামাজিক দায়িত্ব
এ ধরনের ঘটনা শিশু সুরক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পাশাপাশি, শিশুদের সঙ্গে যৌন নির্যাতনের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
শেষ কথা
রংপুরের মিঠাপুকুরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিকটি আবারও উন্মোচিত করেছে। শিশুটির দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। একই সঙ্গে, আমরা আশা করি, দোষী ব্যক্তি দ্রুত গ্রেপ্তার হবে এবং আইনের কঠোর হস্তে তার শাস্তি নিশ্চিত হবে। শিশু সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।