Dhaka ০৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
শিরোনাম :

দীঘি বনাম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান: টগর ছবি নিয়ে উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব

  • Update Time : ০৯:২৪:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 104

চলচ্চিত্র জগতে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। এবার তিনি জড়িয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে। ‘টগর’ সিনেমা থেকে বাদ পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। প্রথম ঘোষণায় টিজারে নাম থাকলেও শুটিং শুরুর আগেই দীঘিকে বাদ দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে নায়িকা হিসেবে নির্বাচিত হন পূজা চেরী। এই সিদ্ধান্তের পেছনে দীঘির পেশাদারিত্বের অভাবকে দায়ী করেছেন পরিচালক আলোক হাসান। তবে দীঘি এই অভিযোগ অস্বীকার করে আইনি পদক্ষেপ ও শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ করার হুমকি দিয়েছেন।

বাদ পড়ার কারণ কী?

‘টগর’ সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এ আর মুভি নেটওয়ার্ক দীঘির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, দীঘি প্রজেক্টে অনবোর্ড হওয়ার পরেও স্ক্রিপ্টের ফাইনাল ড্রাফট পড়তে সময় দেননি। পরিচালকের ফোন ও মেসেজের জবাব দিতেও তার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এছাড়াও কনটেন্ট প্রমোশনের সময়ও তিনি উপস্থিত থাকেননি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দাবি, দীঘির এমন অনীহা ও দায়িত্বহীনতার কারণে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আরও জানায়, গত ২২ জানুয়ারি দীঘিকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সেদিন তিনি পরিচালকের সঙ্গে ২০ মিনিট কথা বলেন এবং শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এরপর তিনি তার সহশিল্পী আদর আজাদের সঙ্গেও ৩৪ মিনিট কথা বলেন। তবে এক মাস পর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যখন আনুষ্ঠানিকভাবে মোশন পোস্টার প্রকাশ করে এবং নায়িকার নাম ঘোষণা করে, তখনই দীঘি শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ ও আইনি পদক্ষেপের কথা বলেন।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পাল্টা হুমকি

দীঘির অভিযোগের জবাবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি পাল্টা হুমকি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দীঘি যদি এই বিষয়ে আরও উত্তপ্ত করেন, তাহলে ২২ জানুয়ারি হওয়া তার সঙ্গে টিমের দুটি কনভারসেশনের অডিও অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির দাবি, দীঘির অপেশাদার আচরণের কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, শুধু টিজার শুট করা হয়েছে, মূল শুটিং শুরু হয়নি। বিশ্বব্যাপী এমন অসংখ্য নজির রয়েছে, যেখানে মূল শুটিংয়ের পরও কাস্টিং পরিবর্তন করা হয়েছে।

দীঘির অতীত দ্বন্দ্ব

এটি প্রথম নয়, যখন দীঘি নির্মাতা ও প্রযোজকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। এর আগেও তিনি ‘তুমি আছো তুমি নেই’ সিনেমা নিয়ে নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন। এছাড়াও রায়হান রাফীর ‘সুড়ঙ্গ’ ছবি থেকে বাদ পড়ার পরও তিনি একই ধরনের আচরণ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শিল্পী সমাজের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় শিল্পী সমাজও বিভক্ত। কেউ কেউ দীঘির পক্ষে থাকলেও অনেকেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলে মনে করছেন। তাদের মতে, একজন শিল্পীর পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো শিল্পী প্রজেক্টে কমিটেড না থাকেন, তাহলে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যৌক্তিক।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

দীঘি ইতিমধ্যে শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ দায়ের করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি মানহানির মামলা করার কথাও বলেছেন। অন্যদিকে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও দীঘির বিরুদ্ধে আরও তথ্য প্রকাশ করার হুমকি দিয়েছে। এই দ্বন্দ্বের পরিণতি কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এই ঘটনা চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার ঝড় তুলেছে।

উপসংহার

‘টগর’ সিনেমা থেকে দীঘির বাদ পড়ার ঘটনা চলচ্চিত্র জগতে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা শুধু দীঘি ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি শিল্পী সমাজ ও দর্শকদের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের প্রশ্নে এই দ্বন্দ্ব চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে। আগামী দিনে এই ঘটনার কী পরিণতি হয়, তা সকলের কাছেই আগ্রহের বিষয়।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

দীঘি বনাম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান: টগর ছবি নিয়ে উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব

Update Time : ০৯:২৪:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চলচ্চিত্র জগতে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। এবার তিনি জড়িয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে। ‘টগর’ সিনেমা থেকে বাদ পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। প্রথম ঘোষণায় টিজারে নাম থাকলেও শুটিং শুরুর আগেই দীঘিকে বাদ দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে নায়িকা হিসেবে নির্বাচিত হন পূজা চেরী। এই সিদ্ধান্তের পেছনে দীঘির পেশাদারিত্বের অভাবকে দায়ী করেছেন পরিচালক আলোক হাসান। তবে দীঘি এই অভিযোগ অস্বীকার করে আইনি পদক্ষেপ ও শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ করার হুমকি দিয়েছেন।

বাদ পড়ার কারণ কী?

‘টগর’ সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এ আর মুভি নেটওয়ার্ক দীঘির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, দীঘি প্রজেক্টে অনবোর্ড হওয়ার পরেও স্ক্রিপ্টের ফাইনাল ড্রাফট পড়তে সময় দেননি। পরিচালকের ফোন ও মেসেজের জবাব দিতেও তার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এছাড়াও কনটেন্ট প্রমোশনের সময়ও তিনি উপস্থিত থাকেননি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দাবি, দীঘির এমন অনীহা ও দায়িত্বহীনতার কারণে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আরও জানায়, গত ২২ জানুয়ারি দীঘিকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সেদিন তিনি পরিচালকের সঙ্গে ২০ মিনিট কথা বলেন এবং শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এরপর তিনি তার সহশিল্পী আদর আজাদের সঙ্গেও ৩৪ মিনিট কথা বলেন। তবে এক মাস পর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যখন আনুষ্ঠানিকভাবে মোশন পোস্টার প্রকাশ করে এবং নায়িকার নাম ঘোষণা করে, তখনই দীঘি শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ ও আইনি পদক্ষেপের কথা বলেন।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পাল্টা হুমকি

দীঘির অভিযোগের জবাবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি পাল্টা হুমকি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দীঘি যদি এই বিষয়ে আরও উত্তপ্ত করেন, তাহলে ২২ জানুয়ারি হওয়া তার সঙ্গে টিমের দুটি কনভারসেশনের অডিও অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির দাবি, দীঘির অপেশাদার আচরণের কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, শুধু টিজার শুট করা হয়েছে, মূল শুটিং শুরু হয়নি। বিশ্বব্যাপী এমন অসংখ্য নজির রয়েছে, যেখানে মূল শুটিংয়ের পরও কাস্টিং পরিবর্তন করা হয়েছে।

দীঘির অতীত দ্বন্দ্ব

এটি প্রথম নয়, যখন দীঘি নির্মাতা ও প্রযোজকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। এর আগেও তিনি ‘তুমি আছো তুমি নেই’ সিনেমা নিয়ে নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন। এছাড়াও রায়হান রাফীর ‘সুড়ঙ্গ’ ছবি থেকে বাদ পড়ার পরও তিনি একই ধরনের আচরণ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শিল্পী সমাজের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় শিল্পী সমাজও বিভক্ত। কেউ কেউ দীঘির পক্ষে থাকলেও অনেকেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলে মনে করছেন। তাদের মতে, একজন শিল্পীর পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো শিল্পী প্রজেক্টে কমিটেড না থাকেন, তাহলে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যৌক্তিক।

পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

দীঘি ইতিমধ্যে শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ দায়ের করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি মানহানির মামলা করার কথাও বলেছেন। অন্যদিকে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও দীঘির বিরুদ্ধে আরও তথ্য প্রকাশ করার হুমকি দিয়েছে। এই দ্বন্দ্বের পরিণতি কী হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এই ঘটনা চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার ঝড় তুলেছে।

উপসংহার

‘টগর’ সিনেমা থেকে দীঘির বাদ পড়ার ঘটনা চলচ্চিত্র জগতে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা শুধু দীঘি ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি শিল্পী সমাজ ও দর্শকদের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের প্রশ্নে এই দ্বন্দ্ব চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে। আগামী দিনে এই ঘটনার কী পরিণতি হয়, তা সকলের কাছেই আগ্রহের বিষয়।