Dhaka ১০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শিরোনাম :

হাজারো মানুষের মশাল মিছিলে তিস্তা নদী রক্ষার দাবি

  • Update Time : ১১:০২:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 32

তিস্তা নদী রক্ষার দাবি এবং একতরফা পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে রংপুর বিভাগের ৫ জেলার মানুষ বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মশাল জ্বালিয়ে বৃহৎ এক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনকারীরা একসাথে তিস্তা নদী রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

মশাল মিছিলটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় লালমনিরহাট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হাজার হাজার আন্দোলনকারী অংশগ্রহণ করেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সদস্যরা এবং তিস্তা পাড়ের স্থানীয় জনগণ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে একযোগে মিছিলটি করেন।

তিস্তা নদীর সংকট ও প্রতিবাদ

তিস্তা নদীর একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা নদী অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতিবছর তিস্তা অববাহিকায় ২০,০০০ মানুষ উদ্বাস্তু হয় এবং রংপুরের অর্থনীতিও চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এই কারণেই আন্দোলনকারীরা পানি শেয়ারিংয়ের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করার এবং মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ‘‘তিস্তার দুই তীরে ২৪২ কিলোমিটার এবং ৩৬০ কিলোমিটার অববাহিকায় আজ হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এবং জনগণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। আমরা তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নসহ মহাপরিকল্পনা কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে পানি শেয়ারিংয়ের ন্যায্য হিস্যা আদায় করা হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তিস্তা নদী রক্ষার জন্য আমাদের দাবি পূরণ করতে হবে।’’

রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি

মশাল মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের গুরুত্ব

তিস্তা নদী শুধুমাত্র পরিবেশগত দিক থেকে নয়, এটি রংপুর বিভাগের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা ও আয়ের উৎসও। নদীটির রক্ষা, এর পানির সুষ্ঠু বণ্টন এবং সংশ্লিষ্ট মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। তিস্তার দুই কূলে বাস করা মানুষের জীবনযাত্রা, পরিবেশ এবং জীব-বৈচিত্র্যের জন্য তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন একটি অগ্রাধিকারমূলক বিষয়।

তিস্তা নদী রক্ষার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা তাদের প্রতিবাদ ও আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Cricket Update

হাজারো মানুষের মশাল মিছিলে তিস্তা নদী রক্ষার দাবি

Update Time : ১১:০২:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তিস্তা নদী রক্ষার দাবি এবং একতরফা পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে রংপুর বিভাগের ৫ জেলার মানুষ বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মশাল জ্বালিয়ে বৃহৎ এক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। আন্দোলনকারীরা একসাথে তিস্তা নদী রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

মশাল মিছিলটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় লালমনিরহাট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হাজার হাজার আন্দোলনকারী অংশগ্রহণ করেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সদস্যরা এবং তিস্তা পাড়ের স্থানীয় জনগণ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে একযোগে মিছিলটি করেন।

তিস্তা নদীর সংকট ও প্রতিবাদ

তিস্তা নদীর একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা নদী অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতিবছর তিস্তা অববাহিকায় ২০,০০০ মানুষ উদ্বাস্তু হয় এবং রংপুরের অর্থনীতিও চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এই কারণেই আন্দোলনকারীরা পানি শেয়ারিংয়ের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করার এবং মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, ‘‘তিস্তার দুই তীরে ২৪২ কিলোমিটার এবং ৩৬০ কিলোমিটার অববাহিকায় আজ হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এবং জনগণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। আমরা তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নসহ মহাপরিকল্পনা কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে পানি শেয়ারিংয়ের ন্যায্য হিস্যা আদায় করা হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তিস্তা নদী রক্ষার জন্য আমাদের দাবি পূরণ করতে হবে।’’

রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি

মশাল মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের গুরুত্ব

তিস্তা নদী শুধুমাত্র পরিবেশগত দিক থেকে নয়, এটি রংপুর বিভাগের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা ও আয়ের উৎসও। নদীটির রক্ষা, এর পানির সুষ্ঠু বণ্টন এবং সংশ্লিষ্ট মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। তিস্তার দুই কূলে বাস করা মানুষের জীবনযাত্রা, পরিবেশ এবং জীব-বৈচিত্র্যের জন্য তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন একটি অগ্রাধিকারমূলক বিষয়।

তিস্তা নদী রক্ষার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা তাদের প্রতিবাদ ও আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন।