তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের গুলশান-১ গোলচত্বর অবরোধ: সাত দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত

- Update Time : ০৮:৪১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 33
রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি সহ সাত দফা দাবি আদায়ে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রশাসন থেকে এই বিষয়ে সুরাহা না আসে।
তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জাহিদ রানা বলেন, “আমরা ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের অনশনের পরও প্রশাসন কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, তাই সড়ক অবরোধ করেছি।” তিনি আরও জানান, “আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনো সমাধান না আসে।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সড়ক অবরোধের ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গুলশান, বাড্ডা, মহাখালী, এবং তেজগাঁও অঞ্চলে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। অফিসফেরত যাত্রীদের দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের স্লোগানগুলো ছিল “অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “সংগ্রাম সংগ্রাম”, “তিতুমীর আসছে, রাজপথ কাঁপছে”। তারা নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
প্রথম দিকে, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এরপর তারা গুলশান-১ গোলচত্বরের দিকে রওনা দেন। সড়ক অবরোধের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার থেকে তিতুমীর কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে অনশনে বসেন। তাদের দাবি, “তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হোক”। আন্দোলনের এই পর্যায়ে মোট ১২ জন শিক্ষার্থী অনশনে যুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মফিজুল ইসলাম এবং বাংলা বিভাগের আবু নাঈম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তারা আশা করেছিলেন যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন, তবে তাদেরকে ধীরে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে।” মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, “এ ধরনের আন্দোলনে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত না করতে আন্দোলনকারীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এভাবেই চলতে থাকলেও, সরকার তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সচেতন এবং সহানুভূতিশীল রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।