জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিবেদন: বাংলাদেশের সরকারের প্রতিক্রিয়া

- Update Time : ০৫:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 32
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনারের অফিস (ওএইচসিএইচআর) সম্প্রতি বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও জনগণের ওপর ঘটিত দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ সরকার, বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার, জাতিসংঘের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তার অফিস থেকে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানান, সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং শান্তিপূর্ণ দেশ প্রতিষ্ঠার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেছেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকারে কর্মরত সকল সদস্য এবং কোটি কোটি নাগরিকের সহযোগিতায় বাংলাদেশকে এমন একটি দেশে পরিণত করার জন্য কাজ করছি, যেখানে সবাই নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও আওয়ামী লীগ বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন এবং নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহায়তায় একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো ঘটনাগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে উঠে আসে যে, আওয়ামী লীগ এবং সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী একত্রে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল এবং সরকারের তরফ থেকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শত শত মানুষ নিহত হয়েছিলেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পুলিশের রাইফেল এবং অতিরিক্ত ভয়াবহ অস্ত্র দ্বারা নিহত হন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় ছিল যে, হত্যার শিকারদের ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল।
এছাড়া, ওই সময় অন্তত ১১,৭০০ জন মানুষকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়েছিল এবং অনেকেই গুরুতর শারীরিক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন। এ সমস্ত ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা, নির্দেশনা এবং সমন্বয়ের ভূমিকা ছিল।
এ পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের সরকার এই তদন্তের প্রক্রিয়া ও প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে।
এ প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে এবং তা বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।